প্রতিনিধি বরিশাল

হামলায় আহত তিনজনকে রিশালের শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

বরিশালে পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে লিটন সিকদার ওরফে লিটু (৪২) নামে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক সাবেক নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নগরের কাশিপুরের বিল্লবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত লিটন সিকদার বরিশাল মহানগরের ২৯ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ওই এলাকার নজির সিকদারের ছেলে। হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন নিহত লিটনের মা হালিমা বেগম (৬০), ছোট ভাই সুমন সিকদার (৩৫) ও বোন মুন্নি বেগম (৩৮)। তাঁদের বরিশালের শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নিহত লিটনের পরিবার জানায়, লিটনের বোন মুন্নি বেগমের স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় পারিবারিক কলহ চলছিল। এর জেরে মুন্নি বেগমের স্বামী জাকির হোসেন গাজীর দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে গতকাল জামিন পান লিটন, তাঁর বোন মুন্নি ও ছোট ভাই সুমন সিকদার। তাঁরা সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে ফেরেন। খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে দেড় শ থেকে দুই শ লোক লিটনের বাড়িতে হামলা চালান। তাঁকে ও পরিবারের সদস্যদের মারধর ও কুপিয়ে জখম করা হয়। এ সময় বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।

মুন্নি বেগম জানান, তাঁর স্বামী জাকির হোসেন গাজী দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। এরপর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক বিরোধ চলছিল। এর জেরে মুন্নি বেগমকে মারধর করতেন জাকির গাজী। তিনি গত ২৭ জুলাই বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন।

তবে প্রতিপক্ষের একটি সূত্র জানায়, মুন্নি বেগমের ভাই লিটন সিকদার বোনের স্বামী জাকির হোসেন গাজীকে সম্প্রতি ধরে নিয়ে মারধর করে দুই দিন আটকে রেখে সাদা চেক ও স্ট্যাম্পে সই নেন। পরে জাকিরের পরিবার খবর পেয়ে বিমানবন্দর থানার পুলিশকে জানায় এবং তাঁকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২৭ জুলাই জাকির গাজী বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন। ওই দিনই মুন্নি বেগমও তাঁকে নির্যাতনের অভিযোগ এনে থানায় পৃথক একটি মামলা করেন।

জাকির গাজীর করা মামলায় লিটন সিকদার, মুন্নি বেগম ও সুমন সিকদার গ্রেপ্তার হন। ওই মামলায় জামিনে মুক্ত হয়ে লিটন সিকদার ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা গতকাল সন্ধ্যায় ওই বাড়িতে আসেন। এরপর রাতে তাঁদের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।

নিহত লিটন সিকদারের ভাই সুমন সিকদারের দাবি, লিটন সিকদার এলাকায় মাদকবিরোধী ভূমিকা রাখায় দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব চলছিল। কয়েকবার তিনি মাদক ব্যবসায়ীদের পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছিলেন। এ কারণে ক্ষুব্ধ ছিল মাদক ব্যবসায়ী একটি চক্র।

এ ব্যাপারে বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির সিকদার বলেন, হামলার সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ ছিল না। এ ঘটনায় রাতেই সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তদন্ত শেষে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।