কারাগার | প্রতীকী ছবি

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে অন্তত ২০ বছর কারাগারে ছিলেন, এমন ৫৬ বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে সরকার। ‘টোয়েন্টি ইয়ারস রুল’ নামে পরিচিত বিধির আওতায় তাঁদের অবশিষ্ট সাজা মওকুফ করা হয়। সাজা মওকুফের আদেশ পৌঁছানোর আগে খুলনা জেলা কারাগারের কয়েদি হোসেন আলী মোড়ল নামের এক বন্দীর মৃত্যু হয়েছে। সম্প্রতি তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

কারা অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও সহকারী মহাপরিদর্শক (উন্নয়ন) জান্নাত-উল-ফরহাদ আজ বুধবার বলেন, সাজা মওকুফ হওয়া বন্দীদের মধ্যে অধিকাংশ সংশ্লিষ্ট কারাগার থেকে গতকাল মঙ্গলবার এবং আজ মুক্ত হয়েছেন। অন্যরাও কয়েক দিনের মধ্যে মুক্তি পেয়ে যাবেন। আদালত রায় ঘোষণার সময় তাঁদের জরিমানা করেছিলেন। সেই জরিমানার টাকা পরিশোধ করে তাঁরা মুক্ত হতে পারবেন।

কারা কর্মকর্তা ফরহাদ বলেন, যাবজ্জীবন সাজা ৩০ বছরের। এর মধ্যে যাঁরা রেয়াতসহ ২০ বছর সাজা ভোগ করেছেন, তাঁদের থেকে নির্বাচিত কিছু বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে মামলার ধরন, গুরুত্ব, বন্দীর আচরণ, শৃঙ্খলা রক্ষাসহ বেশ কিছু বিষয় বিবেচনায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। যাচাই-বাছাই শেষে কিছু বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। গুরুত্বপূর্ণ বা চাঞ্চল্যকর নয়, এমন মামলায় দণ্ডিত ব্যক্তিরাই এ ধরনের সাজা মওকুফের আওতায় রয়েছেন। কারাবিধি ৫৬৯ অনুযায়ী এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ (১) ধারার ক্ষমতাবলে সরকার ২০ বছর সাজা ভোগ করা বন্দীদের মধ্যে ৫৬ জনের অবশিষ্ট সাজা মওকুফ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে খুলনা জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক মো. নাসির উদ্দিন প্রধান  বলেন, খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হোসেন আলী মোড়ল (৫৮) গত ঈদুল আজহার দু-এক দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। তাঁর কয়েদি নম্বর ৬০০৮/এ। তিনি ১৮ বছর ১০ মাস সাজা খেটেছিলেন। তাঁর অবশিষ্ট সাজা মওকুফের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, হোসেন আলী হৃদ্‌রোগ ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। তাঁর কিডনিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। খুলনা করাগারে আসার আগে তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। সর্বশেষ তাঁকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তিনি কারা হেফাজতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

খুলনা জেলা কারাগারে উপতত্ত্বাবধায়ক (জেলার) মুহাম্মদ মুনীর হোসাইন আজ বলেন, খুলনার ডুমুরিয়ায় একটি খুনের মামলায় হোসেন আলী মোড়লের যাবজ্জীবন সাজা হয়েছিল। তাঁর বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার কালিকাপুর গ্রামে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনেরা গ্রামের বাড়িতে হোসেন আলীর লাশ দাফন করেছেন।