সংবাদদাতা নওগাঁ
![]() |
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মিথ্যা আশ্বাস নয়, বাস্তবতার আলোকে নতুন সংবিধান ও সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথাগত রাজনীতিবিদদের মতো বলি না, এটা দেব, সেটা করব। সময়ের দাবি থেকেই আমরা রাজনৈতিক দল গঠন করেছি।’
শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় নওগাঁ শহরের নওজোয়ান মাঠে পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি। 'দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা'র পঞ্চম দিনে এ সভার আয়োজন করে নওগাঁ জেলা এনসিপি।
এর আগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহরের দয়ালের মোড় থেকে পদযাত্রা শুরু করেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা।
পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণ ও তরুণেরা বিকল্প নেতৃত্ব হিসেবে উঠে এসেছে। আমরা সেই বিকল্প নেতৃত্ব ও বিকল্প ইশতেহার আপনাদের সামনে রাখছি। বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধান প্রণয়নের মধ্য দিয়ে দেশের পুনর্গঠন আমাদের লক্ষ্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৬ বছর ধরে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন চলছে। নির্যাতন আর দমন-পীড়নের শিকার সাধারণ মানুষ। এই নওগাঁতেও আমার ভাইয়ের রক্ত রাজপথে ঝরেছে। এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও কোনো দৃশ্যমান বিচার হয়নি। তাই আমরা বলছি—এবার আমাদের দাবি বিচার, সংস্কার এবং নতুন সংবিধান।’
নাহিদ বলেন, ‘এখানে একটু আগে একটি প্ল্যাকার্ডে দেখেছি—স্বাধীনতা এনেছি, সংস্কারও আনব। একাত্তরে স্বাধীনতা এসেছিল, কিন্তু তা ধরে রাখা যায়নি। সেই ভুল আর করতে চাই না। ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানও যেন বেহাত না হয়, সে জন্য আজ নওগাঁ থেকে আমরা শপথ নিচ্ছি—স্বাধীনতা এনেছি, সংস্কারও আনব, এবং সেই স্বাধীনতাকে রক্ষা করব।’
পথসভায় এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘এক বছর হয়ে গেলেও এখনো ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের মামলার চার্জশিট হয়নি। যারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে—তাদের বিচার হতেই হবে। শেখ হাসিনা ও তাঁর সহযোগীদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা ও যুগ্ম সদস্যসচিব মনিরা শারমিন।
পথসভা শেষে রাত ১০টার দিকে নাহিদ ইসলাম নওগাঁ জেলা কার্যালয়ে যান। সেখানে তিনি ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।