সংবাদদাতা বগুড়া

ভাঙন অব্যাহত থাকলে হুমকির মুখে পড়বেন সারিয়াকান্দি উপজেলার হাজারো পরিবার | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর ডান তীরে গত কয়েক বছর ধরে ভাঙনের সমস্যা বাড়ছে, এবারও সেই সমস্যা আবার দেখা দিয়েছে। ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে যমুনার পানি বেড়ে যাওয়ায় ভাঙন তীব্র রূপ নিয়েছে। 

কামালপুর ইউনিয়নের গোদাখালি এলাকায় ভাঙনের কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মাত্র সাত দিনের মধ্যে প্রায় ৩০০ বিঘা চাষের জমি, বাড়িঘর ও নদী সংরক্ষণের বাঁধ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

বগুড়ার পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, যমুনার ডান তীরের কিছু জায়গা এখনও ঝুঁকির মধ্যে আছে। ১ জুলাই মথুরাপাড়া স্টেশনে যমুনার পানি বিপদসীমার নিচে থাকলেও পানি বেড়ে যাওয়ায় ভাঙন শুরু হয়েছে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সারিয়াকান্দির গোদাখালি এলাকার নদীর তীর থেকে বাঁধ প্রায় ৫০০ মিটার দূরে, তবে অনেক জায়গায় দূরত্ব কম। গত কয়েক বছরে ওই এলাকায় শতাধিক বাড়ি ও অনেক জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এতে অনেক পরিবার গৃহহীন হয়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করলেও এখনো পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বর্ষার শুরুতেই কামালপুর, ইছামারা, হাওড়াখালী ও দড়িপাড়া এলাকায় নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। গত সাত দিনে প্রায় ৩০০ বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। ওই জমিতে আউশ ধান, পাট, কাউন, চিনাবাদাম, বেগুন ও ভুট্টাসহ নানা ফসল ছিল।

ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কামালপুর গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, 'তার দেড় বিঘা জমি নদীতে হারিয়ে গেছে। একই এলাকার কবির হোসেন জানান, ভাঙনের ফলে তাদের অধিকাংশ ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে। আরেক কৃষক মিলন বলেন, জমি হারানোর কারণে তারা এখন দিশাহারা হয়ে পড়েছেন, সংসার চালানোর উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না।'

সারিয়াকান্দি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন, 'বর্তমানে ৩০০ মিটার এলাকা নদীতে ধ্বসে গেছে। প্রধান প্রকৌশলী ভাঙন এলাকায় পরিদর্শন করেছেন এবং নির্দেশনা দিয়েছেন। ভাঙনের কারণ জানতে জরুরি জরিপ চলছে। রিপোর্ট পেলে নদী রক্ষায় প্রয়োজনীয় কাজ করা হবে।'

তিনি আরও জানান, 'জরুরি ভিত্তিতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ দিয়ে কিছু কাজ শুরু করা হবে। ভবিষ্যতে নদী ভাঙন প্রতিরোধে পাকা বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।'