পদ্মা ট্রিবিউন ডেস্ক

রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন। বৃহস্পতিবার রাজশাহী নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে  | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন দলের একাংশের নেতা-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে।

‘মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন, রাজশাহী’র ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এতে মহানগর বিএনপির চারটি থানার সাবেক কমিটির নেতারা নেতৃত্ব দেন। আওয়ামী লীগের দোসরদের বাদ দিয়ে পরীক্ষিত, ত্যাগী নেতা-কর্মীদের দিয়ে নতুন করে রাজশাহী মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের দাবি জানান তাঁরা।

অংশগ্রহণকারী বিএনপি নেতারা বলছেন, এটি রাজশাহী মহানগরের বিএনপি রক্ষার আন্দোলন। এর আগে সবশেষ গত ২৫ মে একই কর্মসূচি পালন করেন এই একাংশের নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়া একই দাবিতে ৩ মে বিক্ষোভ সমাবেশ ও ১১ মে তাঁরা সংবাদ সম্মেলন করেন।

দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নগরের বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান, নগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদ রবিউল আলম, শাহ মখদুম থানার সাবেক সভাপতি মো. মাসুদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন, রাজপাড়া থানার সাবেক সভাপতি শওকত আলী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন, মতিহার থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আনসার আলী, মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রোকসানা বেগম (টুকটুকি) প্রমুখ।

বৃষ্টি উপেক্ষা করে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন বিএনপির একাংশের নেতা–কর্মীরা। বৃহস্পতিবার রাজশাহী নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

নগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ৯০ দিনের এই কমিটির (মহানগর বিএনপি) সাড়ে তিন বছর অতিবাহিত হয়েছে। এই সময়ে তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি। এখন তারা আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপি বানিয়ে কমিটি করছে। এর কারণ, তাদের সঙ্গে রাজশাহীর মানুষ নেই। তারা বিচ্ছিন্ন একটি দল। তারা বিএনপির নামে লুটতরাজ করছে। বিএনপিকে খাটো করার জন্য এগুলো করছে। বর্তমান কমিটি দিনের বেলায় বিএনপি করে আর রাতের বেলায় আওয়ামী লীগ করে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের শরীরে একবিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত এখানে বিএনপিকে খাটো করতে দেব না। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দ্রুত বাতিল করে মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড কমিটি দিতে হবে।’

বোয়ালিয়া থানার সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গত ১৭ বছরে যা করেছে, বিএনপি তা করবে না। কিন্তু বিএনপির বর্তমান এই কমিটি বিভিন্ন ফুটপাতে অফিস বানিয়ে দিচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের চলাফেরায় অসুবিধা হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি হচ্ছে। রাজশাহীর মানুষের যেটা ভালো হয়, সেই কাজই আমরা করতে চাই। কারণ, আমরা রাজশাহী বিএনপির ত্যাগী নেতা।’

নগরের বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতার উসকানিতে ১১ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি করা হয় রাজশাহী মহানগরে। সেই কমিটি ঘোষণা দেওয়ার পরই রাতারাতি থানা ও ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত করে দেয়। তারা ত্যাগী নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তারা বিগত কয়েক বছরে আর কোনো কমিটি করতে পারেনি। ৫ আগস্টের পর তারা ঘরে বসে কমিটি দেয়। এই মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিল করতে হবে। নতুন নেতৃত্ব আনতে হবে। সেখানে থাকবেন ত্যাগী নেতারা।

এ ব্যাপারে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড কমিটি সম্মেলন করে ওপেনলি ঘোষণা করেছি। আমাদের ঘোষিত কমিটিতে কে আওয়ামী লীগের, তারা এটা বলুক। আমরা কমিটি ঘোষণার সময় তাদেরও ডেকেছি। তারা আসেনি। তারা না এলে কমিটিতে থাকবে কী করে। মূলত পদ না পেয়ে তারা রাস্তায় নেমেছে। তারা বিএনপিকে খাটো করছে। তারাই আওয়ামী লীগের দোসর।’