প্রতিনিধি মাদারীপুর

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) | ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির সমন্বয় কমিটিতে স্থান পেয়েছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, একজন শিক্ষক কীভাবে সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত হন।

ওই ব্যক্তির নাম শাহাদাত হোসেন খান। তিনি উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের ৮৫ নম্বর দত্তপাড়া খারাকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও এনসিপির শিবচর উপজেলা শাখার ১ নম্বর যুগ্ম সমন্বয়কারী।

গত ১৫ জুন শিবচর উপজেলায় এনসিপির ২১ সদস্যের একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় কমিটি। এতে প্রধান সমন্বয়কারী করা হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রাজু আহমেদকে। আগামী তিন মাস অথবা আহ্বায়ক কমিটি গঠনের আগপর্যন্ত এই কমিটিকে অনুমোদন দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। এক মাস আগে এনসিপির এই কমিটি গঠিত হয়। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হলে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় পর্যায়ে এনসিপির কয়েকজন নেতা-কর্মী ও বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, গত বছর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে শাহাদাতকে কেউ কোথায় দেখেননি। তবে ৫ আগস্টের পর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে তাঁকে দেখা যায়। হঠাৎ করে তিনি এনসিপির সমন্বয় কমিটিতে ১ নম্বর যুগ্ম সমন্বয়কারীর পদ পাওয়ায় অনেকেই বিস্মিত হন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিপির এক নেতা বলেন, গত জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় যাঁরা শিবচরে দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখেছেন, তাঁদের অনেককেই এই সমন্বয় কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি। যাঁরা সমন্বয় কমিটিতে আছেন, তাঁরা বেশির ভাগই বহিরাগত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব দিয়েছে কমিটি করার জন্য। মূল কমিটি যখন হবে তখন তো আমি থাকব না। আমি নাগরিক কমিটিতে ছিলাম। আর তখন দলমত–নির্বিশেষে ওই কমিটিতে আমার মতো অনেকেই ছিল। সেখান থেকে এনসিপির এই কমিটি হয়ে আসছে। সরকারি চাকরি করে তো এখানে এভাবে থাকা যাবে না। আপাতত আছি, পরে থাকব না। বিষয়টি আমার অথরিটিও জানে।’

সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা-১৯৭৯ এর ২৫(১) ধারায় স্পষ্টভাবে বলা আছে, কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজনৈতিক দল বা তার অঙ্গসংগঠনের সদস্য হতে পারবেন না এবং কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবেন না। একই ধারার ২৫(৩) উপধারায় বলা আছে, কোনো সরকারি কর্মচারী নির্বাচন উপলক্ষে কোনো ধরনের প্রচারণায়ও অংশ নিতে পারবেন না।

শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রবীন্দ্রনাথ দত্ত বলেন, যদি বিষয়টি সত্যি হয়, তাহলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।