[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

পদ্মা সেতু রক্ষা বাঁধে ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ, আতঙ্কে ৭০০ পরিবার

প্রকাশঃ
অ+ অ-

প্রতিনিধি শরীয়তপুর

শরীয়তপুরের জাজিরার মাঝিকান্দি এলাকায় পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধের ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন লোকজন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মাঝিকান্দি এলাকায় পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধে ধস ঠেকাতে দুদিন ধরে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তবুও এলাকায় বিরাজ করছে তীব্র ভাঙন আতঙ্ক। বিপদে আছেন অন্তত ৭০০ পরিবার।

মঙ্গলবার দুপুর থেকে শতাধিক শ্রমিক ও দুটি বার্জ ব্যবহার করে ভাঙনকবলিত স্থানে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করছে পাউবো। কর্তৃপক্ষ বলছে, রাত থেকে নতুন করে আর কোনো দোকান বা বাড়ি নদীগর্ভে যায়নি।

তবে স্থানীয়দের আশঙ্কা, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে রাস্তা, হাট-বাজারসহ শতাধিক ঘরবাড়ি পদ্মায় বিলীন হয়ে যেতে পারে। সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন আলম খাঁর কান্দি, উকিল উদ্দিন মুন্সি কান্দি ও ওছিম উদ্দিন মুন্সি কান্দি গ্রামের বাসিন্দারা।

ভাঙন ঠেকাতে এখন পর্যন্ত এক হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হলেও তাতে তেমন ফল মিলছে না বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

এর আগে সোমবার বিকেলে পদ্মার তীব্র ভাঙনে মাঝিরঘাট এলাকায় পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধের ২০০ মিটার নদীগর্ভে চলে যায়। এতে ১০টি বসতঘর ও নয়টি দোকানঘর ভেঙে পড়ে। অনেক দোকান ও বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।

পাউবো জানায়, ২০১০-১১ অর্থবছরে পদ্মা সেতুর ল্যান্ডিং পয়েন্ট থেকে মাঝিরঘাট জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার ভাটিতে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে।

গত বছরের ৩ নভেম্বর বাঁধটির প্রায় ১০০ মিটার ধসে পড়ে। চলতি বছর এটির সংস্কারের দায়িত্ব পায় পাউবো। দুই কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সেখানে জিও ব্যাগ ও সিসি ব্লক ফেলার কাজ শুরু করে তারা।

কোরবানির ঈদের দিনও বাঁধের জিরো পয়েন্ট অংশে আড়াইশ মিটার ধসে পড়ে। তখন ১৩টি ঘর ও দুটি দোকান সরিয়ে নিতে বাধ্য হন স্থানীয়রা।

সাম্প্রতিক ভাঙনের পর মঙ্গলবার এলাকা পরিদর্শন করেন শরীয়তপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদ হোসেন, জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাবেরী রায়, পাউবো ফরিদপুরের প্রধান প্রকৌশলী মো. শাজাহান সিরাজ ও পাউবো শরীয়তপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান।

জাজিরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ৩০টি পরিবারের তালিকা করা হয়েছে। তাদের দেওয়া হয়েছে শুকনো খাবার।

স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক হোসেন বলেন, 'সোমবার রাত থেকে নতুন করে কিছু না ভাঙলেও আমরা চরম আতঙ্কের মধ্যে আছি।'

মঙ্গল মাঝির ঘাট বাজারের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন দেওয়ান বলেন, 'চমকা ভাঙনে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। তার ওপর তিন দিন ধরে টানা বৃষ্টি, এতে কষ্ট বেড়েছে। পরিবারের সদস্যরাই মালপত্র সরিয়ে নিচ্ছে। আমরা সরকারের কাছে জরুরি ব্যবস্থা চাই।'

স্থানীয় মিজানুর রহমান বলেন, 'নদীর স্রোত পাড়ের দিকেই এসেছে। তাই ভাঙন দেখা দিচ্ছে। গত বছর থেকেই ভাঙন শুরু হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে অনেক পরিবার সর্বস্ব হারাবে।'

জাজিরা ইউএনও কাবেরী রায় বলেন, 'বাঁধ সংস্কারে জরুরি ভিত্তিতে কাজ চলছে। যাদের ঘর সরিয়ে নিতে হয়েছে, তাদের পাঁচ হাজার টাকা করে চেক দেওয়া হয়েছে। যারা ঘর হারিয়েছেন, তাদের দুই বান্ডেল টিন ও শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।'

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান বলেন, 'মঙ্গলবার দুপুর থেকে ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করছি।' 

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন