নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা

র‍্যাব মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান সাংবাদিকদের সামনে ঘটনার বিবরণ দিচ্ছেন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

ছেলে প্রেমিকাকে নিয়ে নেপালে যাচ্ছেন—এই খবর পেয়ে তা ঠেকাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ‘বোমা’ থাকার ভুয়া খবর দিয়েছিলেন এক মা।

এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাঠমান্ডুগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটের উড্ডয়ন বন্ধ হয়ে যায়। পরে বোমা থাকার কোনো প্রমাণ না মেলায় তিন ঘণ্টা পর তা ছেড়ে যায়।

শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, 'প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, কামরুজ্জামান ইমন নামের এক ব্যক্তি তার পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে কাঠমান্ডু যাচ্ছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে তার স্ত্রী ও মা পরিকল্পনা করে ফ্লাইটটি থামানোর চেষ্টা করেন।' 

র‍্যাব প্রধান আরও জানান, ইমনের মা রাশেদা বেগম, স্ত্রী তাহমিনা (২৮) ও ইমনের বন্ধু ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা বর্তমানে র‍্যাবের হেফাজতে রয়েছেন।

র‍্যাব বলছে, 'ইমনের মা তার ছেলের বন্ধু ইমরানের কাছে সহযোগিতা চান। ইমরানের পরামর্শেই তিনি বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ারে ফোন করে বলেন, ফ্লাইটটিতে বোমা আছে।' 

বিমানবন্দরের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম রওশন কবীর জানান, 'ফ্লাইটটির ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল বিকেল পৌনে ৫টায়। যাত্রী ওঠানো শেষে উড়োজাহাজটি রানওয়ের দিকে রওনা হচ্ছিল। এ সময় কন্ট্রোল টাওয়ারে বেনামি একটি ফোন আসে—জানানো হয়, বিমানে বোমা রয়েছে।'

এ খবরের পরপরই উড়োজাহাজটি থামানো হয় এবং যাত্রীদের নামিয়ে তল্লাশি শেষে বিশ্রামঘরে নেওয়া হয় । পরে বিমানবন্দরের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল প্রায় তিন ঘণ্টা তল্লাশি চালায়। তল্লাশিতে কোনো বিস্ফোরক না পাওয়ায় ফ্লাইটটি রাতেই আবার যাত্রী নিয়ে কাঠমান্ডুর উদ্দেশে রওনা দেয়।

র‍্যাব জানায়, 'ফোন নম্বরের সূত্র ধরে রাজধানীর মধ্য দক্ষিণ খান এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকেই ইমনের মা, স্ত্রী এবং বন্ধু ইমরানকে আটক করা হয়। তারা সবাই একটি বেসরকারি এভিয়েশন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।'

র‍্যাব মহাপরিচালক আরও জানান, 'এক বছর ধরে র‍্যাবের অভিযান, গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধারের পরিসংখ্যানও সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়েছে।'