সংবাদদাতা বগুড়া

গুলি উদ্ধারের ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে কনস্টেবল রুহুল আমিনকে আটকে রেখে মারধর করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

বগুড়া পৌরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল বাকীর বাড়িতে চাঁদাবাজির উদ্দেশ্যে গুলি রেখে ফাঁসানোর অভিযোগে পুলিশ সদস্য রুহুল আমিনকে আটক করেছেন স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার দুপুরে শাজাহানপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর শাহপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। বর্তমানে তিনি পুলিশ প্রহরায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, কনস্টেবল রুহুল আমিন আগেও একাধিক অভিযোগে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত ছিলেন। এক সপ্তাহ আগে তিনি ডিবি পুলিশ পরিচয়ে আবদুল বাকীর বাড়িতে গিয়ে খরচের কথা বলে ৫০০ টাকা নিয়ে যান। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে তিনি আবারও ওই বাড়িতে আসেন। সে সময় বাড়িতে কোনো পুরুষ সদস্য উপস্থিত ছিলেন না। বেলা দেড়টার দিকে বাকীর ছেলে সাজ্জাদ হোসেন সবুজ বাড়িতে ফিরলে রুহুল আমিন তাকে পাশের একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে একটি বাক্স খুলতে বলেন। বাক্সের ভেতরে ছিল শটগানের পাঁচ রাউন্ড গুলি। পরে তিনি নিজেই আরও ১৫ রাউন্ড গুলি বের করে দেখান এবং বলেন, ‘এগুলোর ভিত্তিতে মামলা দেওয়া হবে।’

এতে সবুজ হতচকিত হয়ে পড়েন। পরে তিনি বোন শাপলা খাতুনকে ফোন দেন। শাপলার দাবি, ফোনে রুহুল আমিন বলেন, 'এক লাখ ৩০ হাজার টাকা দিলে তোমার ভাইকে ছেড়ে দেব।'  

টাকা কম দেওয়ার কথা বললে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, 'বাইরে আরও ৮-৯ জন পুলিশ সদস্য অপেক্ষা করছেন, দ্রুত টাকা দিতে হবে। শাপলা খাতুন ও তার স্বামী কোর্ট থেকে বাড়ি ফিরে আসার পর প্রতিবেশীরা জড়ো হয়ে রুহুল আমিনকে ঘিরে ফেলেন। অভিযোগ স্পষ্ট হলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন এবং মারধর করেন। পরে শাপলা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে রুহুল আমিনকে উদ্ধার করেন।'

শাজাহানপুর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, 'অপরাধ করলে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা যেত। মারধর করা ঠিক হয়নি। রুহুল আমিন আগেও এক ঘটনায় পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' 

শটগানের পাঁচটি গুলি প্রসঙ্গে ওসি বলেন, রুহুল আমিন জানিয়েছেন বুধবার রাতে ডিউটি শেষ করে তাঁর নামে ইস্যুকৃত শটগান জমা দিলেও গুলি জমা দিতে ভুলে যান। এ কারণে গুলি তাঁর সঙ্গেই ছিল। প্রকৃত ঘটনা জানতে অনুসন্ধান চলছে বলেও জানান ওসি।