প্রতিনিধি ফেনী

বেড়িবাঁধ ভেঙে আশরাফ ও তাঁর ছোট ভাই আলী রাজের ঘর মুহুরী নদীতে ভেঙে পড়ে। মঙ্গলবার রাতে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর গ্রামে  | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

টানা তিন দিনের ভারী বর্ষণ ও ভারতের পাহাড়ি ঢলের পানিতে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর অন্তত ২০টি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে ফুলগাজী, পরশুরাম ও ফেনী সদর উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন দেড় লাখের বেশি মানুষ। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সকালে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, মুহুরী নদীর ১০টি, কহুয়া নদীর ৬টি ও সিলোনিয়া নদীর ৪টি স্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে। প্রবল স্রোতে নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। কোথাও কোথাও বন্ধ হয়ে গেছে সড়ক যোগাযোগ। বিদ্যুৎ সংযোগ ও মোবাইল নেটওয়ার্কও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অনেক এলাকায়।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ছয় উপজেলায় ১৩৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন সাত হাজারের বেশি মানুষ। জরুরি ত্রাণ কার্যক্রম চালাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা।

দৌলতপুরের জহিরুল রাজু বলেন, 'গত বছরের ক্ষতি এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি। এরমধ্যে আবারও পানিতে ডুবে গেলাম। ঘরের সবকিছু ভেসে গেছে।' 

উত্তর শ্রীপুরের বাসিন্দা আলী আজ্জম ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, 'প্রতিবছরই জুলাই-আগস্টে এসে বাঁধ ভাঙে। সরকার বদলায়, কিন্তু আমাদের দুর্ভোগ একই থাকে।' 

গাইনবাড়ির পুষ্পিতা রাণী বলেন, 'শিশু আর বৃদ্ধদের নিয়ে খুব কষ্টে আছি। শুকনো খাবার নেই, বিশুদ্ধ পানিও পাচ্ছি না।' 

ফেনী আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। আগামীকালও হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, 'সকাল ৯টার দিকে নদীর পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কিন্তু বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় আশপাশের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানি কমার পরই বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হবে।'