প্রতিনিধি খুলনা

খুলনা প্রেসক্লাবে আন্দোলনকারীদের অবরোধের মুখে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। শনিবার, ২৮ জুন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  

খুলনা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারের অপসারণ দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে প্রেস ক্লাব পরিদর্শনে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শনিবার বিকেলে খুলনা প্রেস ক্লাব পরিদর্শনে যান প্রেস সচিব। খবর পেয়ে আন্দোলনকারীরা প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান নেন এবং বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁরা সড়ক অবরোধ করে স্লোগান দেন এবং জানান, পুলিশ কমিশনারের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত প্রেস সচিবকে ক্লাব ত্যাগ করতে দেওয়া হবে না।

পরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংলাপে বসেন শফিকুল আলম। প্রায় তিন ঘণ্টা পর রাত ৮টা ৫ মিনিটে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় তিনি প্রেস ক্লাব ত্যাগ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন সাংবাদিক জানান, এর আগে তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে খুলনায় কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখান থেকে বিকেল ৫টার দিকে তিনি প্রেস ক্লাবে পৌঁছান।

প্রেস ক্লাব সূত্র জানায়, সন্ধ্যা পৌনে ৮টার দিকে ক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেন প্রেস সচিব। আলোচনার পর তিনি ক্লাব ত্যাগ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, 'আমরা তিন দিন ধরে খুলনা মহানগর পুলিশের কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করছি, কিন্তু এখনো স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কোনো বক্তব্য দেননি। তাই আমরা প্রেস সচিবকে অনুরোধ করেছি বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টাকে জানানোর জন্য।' 
 
খুলনায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন  
 
গণমাধ্যমকর্মী মোস্তফা জামাল পপলু বলেন, 'বিকেল ৫টার দিকে প্রেস সচিব প্রেস ক্লাবে পৌঁছান। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই আন্দোলনকারী ছাত্র ও নাগরিকদের একটি অংশ ক্লাবের সামনে জড়ো হয়ে অবস্থান নেয়। তখন প্রেস ক্লাবের সদস্যসহ অন্যরা ভেতরে আটকে পড়েন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত প্রেস সচিব ক্লাবেই অবস্থান করেন।' 

প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক এনামুল হক বলেন, 'আন্দোলনকারীরা ক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান নিলে কেউ ক্লাব ত্যাগ করতে পারেননি। প্রেস সচিবও তখন ক্লাবে অবরুদ্ধ ছিলেন।' 
 
পরে শফিকুল আলমের সঙ্গে থাকা সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ বলেন, 'আন্দোলনকারীরা আমাদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন এবং তাঁদের অভিযোগগুলো প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছানোর অনুরোধ করেছেন। আমরা তাঁদের কথা শুনেছি এবং জানিয়েছি, অভিযোগগুলো স্যারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। তবে কোনো প্রতিশ্রুতি আমরা দিইনি।' 

তবে আন্দোলনকারীরা প্রেস ক্লাব ঘেরাও করেনি বলে দাবি করেন ফয়েজ আহম্মদ। তাঁর ভাষায়, 'তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানাতে এসেছিলেন এবং বিশ্বাস করেছিলেন আমরা তাঁদের বক্তব্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছে দেব। তাই ঘটনাটিকে ‘অবরুদ্ধ’ বলা যথাযথ নয়। এটি ছিল শান্তিপূর্ণ মত প্রকাশের অংশ।'