নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। ২৮ জুন ২০২৫ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা যাঁরা বলছেন, তাঁরা একটি উদ্দেশ্য সামনে রেখেই এমনটি বলছেন বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যাঁরা সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচনের কথা বলছেন, তাঁদের একটি উদ্দেশ্য আছে। যাঁরা স্থানীয় সরকার নির্বাচন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে চান, তাঁদের একটি উদ্দেশ্য আছে। হয় নির্বাচন বিলম্বিত করা, না হয় বাংলাদেশে নির্বাচন না হওয়া। এটা তাঁদের উদ্দেশ্য হতে পারে। তবে এ দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ আছে।’
আজ শনিবার বিকেলে ‘জিয়াউর রহমান: যুদ্ধের ময়দান থেকে রাষ্ট্রের প্রধান’ শীর্ষক একটি স্মারক প্রকাশনা ও আর্কাইভ উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যানালাইসিস অ্যান্ড ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক (ব্রেইন)।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংস্কার এবং বিচার চলমান প্রক্রিয়া। তারা পিআর পদ্ধতিতে নিম্নকক্ষ, তথা জাতীয় সংসদের নির্বাচন চায়। সেটা তাদের রাজনৈতিক অবস্থান। কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় এবং ঐকমত্য কমিশনে যা আলোচনা হয়েছে, পিআর পদ্ধতির নির্বাচন বিষয়ে ঐকমত্য পাইনি।’
বাংলাদেশে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচনের ইতিহাস নেই উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আনুপাতিক নির্বাচন এ দেশের জন্য প্রযোজ্য নয়। যেখানে প্রযোজ্য, সেখানেও অনেক জটিল অবস্থা। এমন নির্বাচনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আসনের ভোটাররা জানবেন না, কে তাঁদের এমপি হবেন। এমপিদের কাছে তাঁরা যে যাবেন, নির্ধারিত কোনো ব্যক্তিকে খুঁজে পাবেন না।’
দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ স্থানীয় নির্বাচনের জন্য নয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সংগ্রাম করেছেন উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে এ দেশে যাতে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ হয়। সেই রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে পারব সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে, যদি নির্বাচিত সরকার গঠিত হয়।’
এ কথা বলার আগে অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের সমালোচনা করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সংস্কারের এখন এমন অবস্থা হয়েছে, আমি মাননীয় উপদেষ্টাকে (সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা) বলছিলাম, একটা কবিতাই লিখে ফেলেন, হে সংস্কার তোমাকে পাওয়ার জন্য, আর কতকাল আলাপ-আলোচনা করিলে, খানাপিনা খাইলে এই সংস্কার কার্যক্রম শেষ হবে।’
সবাইকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব মেনে নিতে হবে, এই যদি নিয়ত হয়, তাহলে কি ঐকমত্য হবে—প্রশ্নে রাখেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘আমরা আলোচনা করছি। কাছাকাছি আসছি। জাতির জন্য যেটা মঙ্গল হবে, সেটা আমরা ধারণ করছি। এভাবেই আমরা সংস্কারের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাব।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) এই সংস্কার এমনভাবে করতে চাচ্ছে, সংবিধানে এমন সংস্কার ঢুকাব, কেউ যাতে বিলুপ্ত করতে না পারে। এটা তো বাইবেল নয়, ধর্মগ্রন্থ নয়। আমরা এমন সংস্কার করব, যে সংস্কার ১০-২০ বছর পরে নতুন প্রজন্মের হাত ধরে নতুন চাহিদার ভিত্তিতে আবার পরিবর্তন হতে হবে। এটাই নিয়ম।’