প্রতিনিধি রংপুর
![]() |
মধ্যরাতে রংপুরে ছুটে আসেন সারজিস, কথা বলেন সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে | ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া |
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের রংপুরের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে সেনাবাহিনী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় স্থানীয় বিএনপি নেতারাও সেনাবাহিনীর প্রশ্নের মুখে পড়েন।
জানা গেছে, ওই রাতে নগরীর পায়রা চত্বর মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা ও মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ ও ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম।
খবর পেয়ে রাতেই বৃষ্টির মধ্যে সেখানে ছুটে যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের সঙ্গে কথা বলেন।
এ সময় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম সারজিস আলমকে বলেছেন, 'শরীরে যতক্ষণ রক্ত আছে, আমরা এমন কাউকে সমর্থন করব না, যারা দেশের বিরুদ্ধে কাজ করে। আপাতত আমাদের অবস্থান পরিষ্কার—যে জনগণের দুর্ভোগ বাড়ায়, নাশকতা করে, আগুন দেয়, ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে—তাদেরকে স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে, এখন এমন কিছু করার সুযোগ নেই।'
সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলার পর সাংবাদিকদের সারজিস আলম বলেন, 'জিএম কাদেরের রংপুরে আগমন ও জাতীয় পার্টির এক সাবেক মেয়রকে পুনরায় দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে এখানে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। রংপুরে এমন পরিস্থিতি আগে দেখা যায়নি, ভবিষ্যতেও তা কাম্য নয়।'
তিনি আরও বলেন, 'গত ১৬ বছর ধরে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগকে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করে আসছে। জাপা এখন আওয়ামী লীগের বি-টিমে পরিণত হয়েছে। শান্তিপূর্ণ রংপুরে তারা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে। তাদের সভা-মিছিলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীরাও অংশ নিচ্ছে। জিএম কাদের এখানে গোপনে বৈঠক করে জাতীয় পার্টির ছায়ায় আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করছেন।'
সারজিস আলম বলেন, 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বিএনপি, জামায়াত কিংবা এনসিপি—যে দলেরই হোক, তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতে পারে। তবে রাত ১টা-২টার সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা দৃষ্টিকটু মনে হয়। আমরা চাই, এমন প্রশ্নোত্তর দিনের আলোতেই হোক। সবাই সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত।'
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে রংপুরের সেনপাড়ায় ‘দ্য স্কাই ভিউ’ নামের ভবনে জি এম কাদেরের বাসায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় তিনি বাসায়ই ছিলেন। এরপর থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় পার্টি ও এনসিপির নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটেছে একাধিক দফায় ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও।