প্রতিনিধি নওগাঁ

নাক ফজলি আম | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

দুই দশক ধরে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা নওগাঁয় বাড়ছে আমবাগানের পরিসর। গত বছর দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ আম উৎপাদিত হয় নওগাঁয়। চলতি মৌসুমে জেলায় সাড়ে চার লাখ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। এবার নওগাঁর সঙ্গে আমের বন্ধন আরও দৃঢ় হলো। নাক ফজলি আমের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) নাম দেওয়া হয়েছে ‘নওগাঁর নাক ফজলি আম’।

নওগাঁ কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় বদলগাছী নাক ফজলি আম চাষি সমিতি নামের একটি সংগঠনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই স্বীকৃতি মিলেছে। আজ মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ। তিনি জানান, গত ১ মে বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় ‘নাক ফজলি আম’ চাষি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মোজাফ্ফর হোসেনের হাতে জিআই সনদ তুলে দেওয়া হয়। সনদ হস্তান্তর করেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বদলগাছীর এই আমের পরিচিতি ও চাহিদা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে নওগাঁর নাক ফজলি আমের পক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরে জিআই নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা হয়। বিধিমতো দুই মাস অপেক্ষার পর, আর কোনো পক্ষ থেকে বিরোধিতার নোটিশ না আসায় ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নাক ফজলি আমের ভৌগোলিক নির্দেশক নাম দেওয়া হয় ‘নওগাঁর নাক ফজলি আম’ এবং এ–সংক্রান্ত সনদ প্রদান করা হয়।

কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নাক ফজলি একটি নাবি মৌসুমি জাতের আম। জুন মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে এটি পাকে এবং আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এটির সংগ্রহকাল। এই ফল বেশ বড়, লম্বাটে চ্যাপ্টা আকারের হয়ে থাকে। ফলটি গড়ে লম্বায় ১০ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার, পুরুত্বে ৪ দশমিক ৪ সেন্টিমিটার এবং গড় ওজন ৩০০ গ্রাম হয়। পাকা ফলের ত্বকের বর্ণ প্রায় সবুজ থেকে হালকা হলুদাভ হয়। আর শাঁসের রং হলুদ। নাক ফজলি আম খেতে সুস্বাদু ও মিষ্টি। খোসা পাতলা, আঁটি লম্বা, চ্যাপ্টা ও পাতলা।

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় এই আমের প্রথম চাষ হয়। এ উপজেলাতেই নাক ফজলি আম বেশি চাষ হয়ে থাকে। বদলগাছী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাবাব ফারহান বলেন, জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃত পাওয়ার মধ্য দিয়ে নওগাঁর নাক ফজলি সারা দেশের সম্পদ হয়ে গেল।