প্রতিনিধি সিলেট
![]() |
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলা ও মহানগরের একটি পক্ষ জেলা সদস্যসচিবের অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে। বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রেসক্লাবে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলা ও মহানগরের একটি পক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে জেলার সদস্যসচিবকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে সংগঠনের মধ্যে বিভাজন, বিশৃঙ্খলা এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে উদ্বেগ তৈরি করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের অভ্যন্তরীণ অনিয়ম, একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ আনা হয়।
এর আগে গত ১৬ এপ্রিল সংগঠনের আহ্বায়ক আকতার হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা থাকায় সংগঠনের পদ থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে—এমনটি জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলেন সিলেট জেলার সদস্যসচিব নুরুল ইসলাম। সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে সালমান খুরশেদ দায়িত্ব পালন করবেন বলে তখন জানানো হয়। সদস্যসচিবের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ও ভুয়া বলে জানিয়েছিলেন আকতার হোসেন।
বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে আকতার হোসেন বলেন, সম্প্রতি সংগঠনের সিলেট জেলার সদস্যসচিব নুরুল ইসলাম জেলার আহ্বায়ককে অব্যাহতি দেওয়ার একটি ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তকে সংগঠনের পক্ষ থেকে অবৈধ, ভিত্তিহীন ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলাপরিপন্থী বলা হয়। জেলা কমিটির ২৭২ জন সদস্যের মধ্যে ২৫৪ জন সদস্য এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অবগত ছিলেন না, এমনকি কেন্দ্রীয় কমিটিকেও বিষয়টি জানানো হয়নি।
আকতার হোসেন আরও বলেন, সদস্যসচিব নুরুল ইসলাম এককভাবে এবং অসাংগঠনিকভাবে সালমান আহমদকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও আয়েশা সিদ্দিকাকে ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র হিসেবে ঘোষণা করেছেন, যা সংগঠনের গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী। এসব কর্মকাণ্ডের কারণে সংগঠনের মধ্যে বিভাজন, বিশৃঙ্খলা এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে এসব অবৈধ সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করে নুরুল ইসলামকে সিলেট জেলা থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি অরাজনৈতিক সংগঠন, যা কোনো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করে না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে লক্ষ করা যাচ্ছে যে সংগঠনের কয়েকজন দায়িত্বশীল সদস্য রাজনৈতিক দলের হয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন, যা সংগঠনের মূলনীতিবিরোধী। কেউ রাজনৈতিক দল বা ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার থেকে অব্যাহতি নিতে হবে। অন্যথায় সংগঠন তার নিজস্ব নীতিমালার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘জুলাই ২৪’-এর বিপ্লবী চেতনা ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার লক্ষ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যক্রম ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন ছাড়াও বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট মহানগর আহ্বায়ক কমিটির মুখ্য সংগঠক মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা শাখার সংগঠক সুমাইয়া আক্তার ও মহানগর কমিটির ফাহিমা মাহি, যুগ্ম আহ্বায়ক পারভেজ আহমেদ, সংগঠক সুমাইয়া, মহানগর আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন ও মহানগরের মুখ্যপাত্র আলী রিয়াদ। উপস্থিত ছিলেন মহানগর মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান-মহানগর সংগঠক ফাহিমা মাহি, যুগ্ম আহ্বায়ক লাহিন আহমদ, সুলতান, মাহফুজ, রানা, জিয়া, সাদ্দাম, জারওয়ার, আশরাফুল, লাকায়েত, কামরান প্রমুখ।
এর আগে জেলার আহ্বায়ককে অব্যাহতি প্রসঙ্গে সংগঠনের সদস্যসচিব নুরুল ইসলাম বলেছিলেন, কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক আকরাম হোসেনের সঙ্গে আলোচনা করে ও তাঁকে অবহিত করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাহী কমিটির ৩৮ জনের মধ্যে ২৩ জন এ সিদ্ধান্তে একমত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৯ জন এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে স্বাক্ষর দিয়েছেন। অন্য চারজন সিলেটের বাইরে রয়েছেন, তাঁরা এলেই স্বাক্ষর দেবেন। নির্বাহী কমিটির পাশাপাশি ৭ সদস্যের নির্বাহী বোর্ডও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।