প্রতিনিধি যশোর

ধর্ষণ | প্রতীকী ছবি

যশোরে ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করার এক দিন পর বাদী বললেন, প্রেমিকের সঙ্গে ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছিল। চাপে পড়ে তিনি মামলা করেছিলেন। আজ রোববার দুপুরে যশোর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ওই তরুণী সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।

গতকাল শনিবার ছাত্রদল নেতা সাইফুল ইসলামকে (রাফা) আসামি করে কোতোয়ালি থানায় ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ওই তরুণী। এর মধ্যে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যশোর জেলা ছাত্রদলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক সাইফুলকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ সংগঠনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লার বাসিন্দা ওই তরুণী বলেন, তিনি ঢাকায় থেকে পড়াশোনা করেন। সাইফুলের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ২৩ মে সন্ধ্যায় সাইফুলকে ‘সারপ্রাইজ’ দিতে তিনি হঠাৎ যশোরে আসেন। সন্ধ্যা সাতটা থেকে আটটার দিকে তিনি শহরের মণিহার এলাকায় পৌঁছান। তাঁর যশোরে আসার বিষয়ে আগে থেকে কিছু জানাননি বলে সাইফুল বিষয়টা মেনে নিতে পারেননি। এরপর তিনি ঢাকায় ফিরে যাচ্ছিলেন। এ সময় যুবদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই নেতা ফোন করে সাইফুলের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা করতে বাধ্য করেন বলে দাবি ওই তরুণীর।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল কোতয়ালি থানায় সাইফুলকে আসামি করে করা মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে ফেসবুকে ওই তরুণীকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান সাইফুল। ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন সাইফুল। তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে গত বছরের ৫ অক্টোবর তিনি ঢাকা থেকে যশোরে আসেন। সেদিন বিকেলে মণিহার সিনেমা হলের সামনে থেকে তাঁকে স্বাগত জানান সাইফুল। সেখান থেকে তাঁকে যশোর আইটি পার্কের পঞ্চম তলার একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন সাইফুল।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, সাইফুল গোপনে ধর্ষণের ভিডিও–ও ধারণ করেন। পরে সেই ভিডিও ও ছবি ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ওই তরুণীর কাছ থেকে প্রথমে দুই লাখ টাকা দাবি করেন সাইফুল। ভয়ে তরুণী টাকা পাঠান। এরপর নগদ, বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ২৩ মে রাতে ওই তরুণী তাঁর বান্ধবীকে নিয়ে সাইফুলের যশোর শহরের বাড়িতে যান। সেখানে মা–বাবা সম্পর্ক মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরে সাইফুল তাঁর বন্ধুদের মাধ্যমে তাঁকে মুঠোফোনে হুমকি দেন এবং বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। বাধ্য হয়ে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করেন বলে উল্লেখ করেন বাদী।

মামলাটির বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসনাত বলেন, ওই তরুণীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।