প্রতিনিধি রাজশাহী

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে আজ বৃহস্পতিবার কারারক্ষী পদে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ  | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

কারারক্ষী পদে নিয়োগের শর্ত চাওয়া হয়েছে প্রার্থীর শারীরিক উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। সেই শর্ত পূরণের পরও রাজশাহীতে অনেককেই শারীরিক পরীক্ষার মাঠ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে বিক্ষোভ করেছেন বাদ পড়া চাকরিপ্রার্থীরা।

সকাল ৯টা থেকে রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণকেন্দ্রের মাঠে চাকরিপ্রার্থীদের শারীরিক যোগ্যতা যাচাই করা হয়। এতে পাঁচ শতাধিক চাকরিপ্রার্থী অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে শারীরিক উচ্চতা মেপেই প্রায় ২০০ জনকে বের করে দেওয়া হয়। তবে তাঁরা চলে না গিয়ে সড়কের পাশে বসে থাকেন। বেলা ১১টা থেকে পরে তাঁরা কারাগারের সামনে বিক্ষোভ করেন। কিছুক্ষণের জন্য তাঁরা সড়কও অবরোধ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। বিকেল ৪টার দিকে তাঁরা ফিরে যান।

এর আগে কথা হয় পাবনা থেকে আসা চাকরিপ্রার্থী বিজয় কুমারের সঙ্গে। তাঁর অভিযোগ, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে শারীরিক উচ্চতা বলা হয়েছে ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। কিন্তু যাদের উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি থেকে ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি পর্যন্ত, তাঁদের শুরুতেই বাদ দেওয়া হয়েছে। ৫ ফুট ৯ ইঞ্চির বেশি যাঁদের উচ্চতা, কেবল তাঁদেরই মাঠে রাখা হয়। এতে অনেকের স্বপ্ন ভেঙে গেছে।

বিজয় কুমার আরও বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে বাদ পড়া দুজন বাইরেই অবস্থান করছিলেন। পরে দুজন কারারক্ষী এসে তাঁদের নিয়ে যান এই বলে যে তাঁরা কর্মকর্তাদের আত্মীয়।’ ওই দুজনের উচ্চতা তাঁদের মতোই ছিল দাবি করেন বিজয় কুমার। তিনি বলেন, ‘এভাবে স্বজনপ্রীতি করার জন্যই আমাদের বের করে দেওয়া হয়েছে।’

কথা হয় রাজশাহীর কাটাখালী থেকে আসা চাকরিপ্রার্থী জোবায়ের হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আবেদনের যোগ্যতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। এই উচ্চতায় আমরা যারা আবেদন করেছি, তাদের আগে শারীরিক অন্য সক্ষমতা পরীক্ষা করতে হবে। তা না করে প্রথমেই বাদ দেওয়া হয়েছে। কোনো চাকরির ক্ষেত্রে এর আগে এমনটি হয়েছে বলে আমরা দেখিনি। আমাদের সঙ্গে অন্যায় হলো।’

জানতে চাইলে রাজশাহী বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) কামাল হোসেন বলেন, ‘৫ ফুট ৬ ইঞ্চি হলো মিনিমাম (ন্যূনতম) যোগ্যতা। এর বেশি উচ্চতার যদি চাকরিপ্রার্থী থাকেন, তাহলে তাঁকে নেবে না কেন? বেশি উচ্চতার প্রার্থীই তো অগ্রাধিকার পাবেন। এটা এভাবেই হয়।’

মাঠ থেকে বের করে দেওয়ার পরও কর্মকর্তাদের আত্মীয় পরিচয়ে কম শারীরিক উচ্চতার দুই চাকরিপ্রার্থীকে ভেতরে নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে কামাল হোসেন বলেন, ‘এ রকম কোনো সুযোগই নেই। অত্যন্ত স্বচ্ছভাবে সবকিছু হচ্ছে। এখানে কেউ স্বজনপ্রীতি করবে, এমন সুযোগ নেই।’