প্রতিনিধি রাজশাহী
![]() |
ভারত থেকে গরু এনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া প্রতারক চক্রের ২ সদস্য। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিজিবির রাজশাহী সদর দপ্তরে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ভারত থেকে ১০ হাজার গরু এনে দেওয়া হবে। প্রতি জোড়া গরুর জন্য অগ্রিম দিতে হবে ৩৫ হাজার টাকা—এমন কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় থাকা প্রতারক চক্রের দুজনকে আটক করেছে বিজিবি। তাঁদের আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী নগরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করা হয়।
এ বিষয়ে সন্ধ্যায় বিজিবির রাজশাহীর সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করেন ১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিবুল হক।
আটক ব্যক্তিরা হলেন মো. মেহেদী হাসান (৫৫) ও মো. নিজাম উদ্দিন (৭১)। মেহেদী হাসানের বাড়ি নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার চরপাড়া গ্রামে। আর নিজাম উদ্দিন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের কালিকাপুর গ্রামের বাসিন্দা।
সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিবুল হক বলেন, আটক দুজন রাজশাহী নগরের একটি আবাসিক হোটেলে ছিলেন। তাঁরা রাজশাহী অঞ্চলের গরু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অগ্রিম হোটেলভাড়া এবং আনুষঙ্গিক খরচও নিয়েছেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাঁদের আটক করা হয়। তাঁদের আটকের পর রাজশাহী বিজিবির সদর দপ্তরে আনা হয়। তাঁরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তাঁরা গরু চোরাচালানের মধ্যস্থতা করে কমিশন নিয়ে থাকেন। তাঁরা গত মঙ্গলবার থেকে রাজশাহীর আবাসিক হোটেলে ছিলেন। তাঁদের মধ্যে নিজাম উদ্দিন নিজেকে সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ মহলের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করেন। আর মেহেদী নিজেকে মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেসের ঠিকাদার দাবি করেন।
১ বিজিবির অধিনায়ক আরও বলেন, ‘এই দুই প্রতারক গরু ব্যবসায়ীদের বলেন, “বিজিবি রাজশাহীর সেক্টর কমান্ডার বলেছেন, গরু চোরাচালানের উদ্দেশ্যে বর্ডার খুলে দেওয়া হবে।” মেহেদী হাসান ব্যবসায়ীদের বলেন, “বিজিবির রাজশাহীর সেক্টর কমান্ডার যাঁদের নির্বাচন করবেন, শুধু তাঁরাই ভারত থেকে গরু আনতে পারবেন।’”
বিজিবি অধিনায়ক আরও বলেন, ভারত থেকে প্রতি জোড়া গরু আনতে ৩৫ হাজার টাকা করে দাবি করেন ওই দুই প্রতারক। একই সঙ্গে তাঁরা ১০ হাজার গরু সীমান্ত পার করে দেওয়ার বিনিময়ে ২০ লাখ টাকা অগ্রিম দাবি করেন। তাঁরা উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে অভিনব কায়দায় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল অবলম্বন করেন। তাঁদের কাছ থেকে তিনটি চেক বই, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের একটা ট্রেড লাইসেন্স এবং প্রায় ৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে জানায় বিজিবি।