নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয়বাদী বৌদ্ধ ফোরামের শান্তি শোভাযাত্রায় রুহুল কবির রিজভী। জাতীয় প্রেসক্লাব, ১১ মে, ২০২৫, ঢাকা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

নির্বাচন বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিএনপিসহ অনেক রাজনৈতিক দল ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নির্বাচনের কথা বলেছে। মানুষ দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাইলেও সরকার এ ব্যাপারে নিশ্চুপ কেন। এখন তো মানুষ ধীরে ধীরে নানা সন্দেহ করছে। বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত ইচ্ছেমতো বাংলাদেশে লোক ঢোকাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।

রোববার রাজধানীতে এক শান্তি শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী। বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ফোরাম এ শোভাযাত্রার আয়োজন করে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘একজন খুনের মামলার আসামি ও সাবেক রাষ্ট্রপতি কীভাবে দেশে থেকে পালিয়ে গেলেন, সেই প্রশ্নের জবাব এখনো জাতি পায়নি। তাঁর লাল পাসপোর্ট বাতিল হয়নি, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কি কিছু জানত না?’।

ডিজিএফআই ও এনএসআই-এর দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, এত বড় একজন ব্যক্তি কীভাবে দেশে থেকে পালিয়ে যান, যদি না ‘ক্লিয়ারেন্স’ দেওয়া হয়? এই বিষয়টি গোটা জাতির জন্য আতঙ্কজনক এবং রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের প্রশ্নে একটি গুরুতর ব্যর্থতার উদাহরণ।

সাতক্ষীরা, কুড়িগ্রাম, খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজারসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে লোক পুশ-ইন (ঠেলে পাঠানো) করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী দেশ তার ইচ্ছামত লোক ঢোকাবেন বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আর আপনারা নিশ্চুপ, আপনারা কেউ সাবধান করছেন না। এর কারণ কি? তাহলে তো শেখ হাসিনা যেমন করেছেন আপনারাও তাই করছেন।’

সরকারের একজন প্রভাবশালী উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, তিনি বিএনপিকে পছন্দ করেন না। তিনি নিজের মতো করে প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছেন। তবুও কেন সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না?

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিষয়ে রিজভী বলেন, বাংলাদেশ হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই একসঙ্গে বসবাস করে এসেছে। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক বিশৃঙ্খলার অভিযোগ যারা তোলে, তারা দেশের বন্ধু হতে পারে না। তিনি গৌতম বুদ্ধের দর্শনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘আমরা সব ধর্মের উৎসবে অংশ নিই, একে অপরের পাশে দাঁড়াই—এটাই বাংলাদেশের শক্তি।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ফোরামের আহ্বায়ক দিলীপ বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক পার্থ প্রতিম বড়ুয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক সাথোয়াইপ্রু চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুশীল বড়ুয়া।