নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
![]() |
নাহিদ ইসলাম | ফাইল ছবি |
দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের পথে যত বড় শক্তিই বাধা হয়ে দাঁড়াক, তা মোকাবিলা করা হবে।
শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডির একটি হোটেলে এনসিপির যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তির সারা দেশের সংগঠকদের নিয়ে পরিচিতি সভা হয়।
সভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমাদের রাজনীতি ও অস্তিত্ব হচ্ছে জুলাই গণ–অভ্যুত্থান। জুলাইকে যত বেশি ধারণ করতে পারব, তত বেশি এগিয়ে যেতে পারব। দুঃখজনক হলো অভ্যুত্থানের অংশীদারেরা একে ক্ষমতার পালাবদল বলে মনে করছে, যার বিরোধিতা করেছে এনসিপি। আমরা মৌলিক সংস্কার চেয়েছি। কিন্তু তারা জুলাইকে রেজিম চেঞ্জ (সরকারের পরিবর্তন) হিসেবে দেখছে। পুরোনো সংবিধানকে আঁকড়ে ধরে ক্ষমতায় যেতে চাইছে। এখানেই আমাদের আপত্তি। এখন আমাদের দরকার সংগঠিত শক্তি।’
চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে। এর ফাঁদে পা না দিয়ে আমরা বরং ঐক্যবদ্ধ থাকব।’
জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবি বাস্তবায়নে যুবসমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের পথে যত বড় শক্তিই বাধা হয়ে দাঁড়াক, তা মোকাবিলা করা হবে।
যুবশক্তিকে রাষ্ট্রের ‘ভ্যানগার্ড’ হিসেবে কাজ করার আহ্বান জানান এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, বর্তমান সংবিধানকে ছুড়ে ফেলে নতুন সংবিধান প্রণয়নের লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
সভায় জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম, সদস্যসচিব জাহেদুল ইসলাম, মুখ্য সংগঠক ফরহাদ সোহেল প্রমুখ বক্তব্য দেন।
নাহিদের ফেসবুক পোস্ট
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ নিয়ে নানা আলোচনা শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে গতকাল রাত সোয়া আটটার দিকে এক ফেসবুক পোস্টে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, দায়িত্বে থেকেই রাজনৈতিকভাবে সব সমস্যার সমাধান করতে হবে অধ্যাপক ইউনূসকে।
নাহিদ ইসলাম তাঁর পোস্টে লিখেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পর আবারও দিল্লি থেকে ছক আঁকা হচ্ছে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করার, দেশকে বিভাজিত করার। গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে বাধাগ্রস্ত করে আরেকটা এক-এগারোর বন্দোবস্ত করার পাঁয়তারা চলছে। ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক, বাংলাদেশপন্থী ও ধর্মপ্রাণ ছাত্র-জনতাকে সার্বভৌমত্ব, সংস্কার ও জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তা ও সৈনিকদের দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রস্তুত থাকতে হবে।
জনগণকে দেওয়া সংস্কার, বিচার ও ভোটাধিকারের প্রতিশ্রুতি অধ্যাপক ইউনূসকে রক্ষা করতে হবে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, তাঁকে দায়িত্বে থেকেই রাজনৈতিকভাবে সব সমস্যার সমাধান করতে হবে। জুলাই ঘোষণাপত্র নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দিতে হবে। ঘোষিত সময়সীমার মধ্যেই নির্বাচন হবে। নির্বাচনের আগে মৌলিক সংস্কারের জুলাই সনদ রচিত হবে।
ফেসবুক পোস্টে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, নির্বাচনের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান হবে এবং বিচারের রোডম্যাপ (পথনকশা) আসতে হবে। নতুন সংবিধানের জন্য গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচন একই সঙ্গে দিতে হবে।