প্রতিনিধি ভৈরব
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করেছে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মধ্যরাতে জুতার একটি বড় মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অন্তত ৩৫টি দোকান পুড়ে গেছে। ব্যবসায়ীদের ধারণা, এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে ভৈরব পৌর শহরের কমলপুর এলাকার হাজী লালু কালু পাদুকা মার্কেটের পেছনের অংশ থেকে আগুনের সূত্রপাত। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট একযোগে কাজ করে রাত সোয়া ২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ভৈরব পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য জুতার মার্কেট ও কারখানা। লক্ষাধিক মানুষ এই খাতে যুক্ত। উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের বিপরীতে অবস্থিত হাজী লালু কালু পাদুকা মার্কেটে শতাধিক দোকান আছে, যেগুলোর বেশির ভাগই কাঁচামালের। গতকাল সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় রাত ১০টার মধ্যে মার্কেট বন্ধ হয়ে যায়। রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে মার্কেটের পেছনের দিক থেকে আগুনের শিখা দেখা যায়। মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে।
মার্কেটসংলগ্ন এলাকাতেই আছে একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন। প্রথমে সেখানকার ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে। পরে ভৈরব বাজার ফায়ার স্টেশন থেকে আরও দুটি ইউনিট যোগ দেয়। মার্কেটের পাশেই দুটি পুকুর থাকলেও জুতা তৈরির বর্জ্যে পুকুর দুটির তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি সংগ্রহে সময় লেগে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী রাজু মিয়া বলেন, ‘সামনে ঈদ। কারখানাগুলোতে উৎপাদন বেড়েছে। চাহিদা ভালো থাকায় দোকানে কয়েক লাখ টাকার ম্যাটেরিয়াল মজুত ছিল। ক্যাশ বাক্সে ছিল আড়াই লাখ টাকা। আগুনে সব পুড়ে গেছে।’ সবুজ মিয়া নামের এক দোকানকর্মী বলেন, ‘আগুনের উত্তাপে দোকান থেকে এক টাকার মালও বের করতে পারিনি।’ আরেক ব্যবসায়ী শাহিন মিয়ার দাবি, তাঁর ১২ লাখ টাকার কাঁচামাল পুড়ে গেছে।
মার্কেটের মালিকদের পক্ষে কথা বলেন প্রতিনিধি কাজী মাসুদ। তিনি জানান, ৪০টির মতো দোকান পুরোপুরি পুড়ে গেছে। আরও কিছু আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ দুই কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
ভৈরব নদী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ আজিজুল হক বলেন, মার্কেটের পাশেই ফায়ার সার্ভিস হওয়ায় দ্রুত পানি ছিটানো সম্ভব হয়েছে। না হলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়ত। মার্কেটের বেশির ভাগ দোকানে জুতা তৈরির আঠা, রাবার, সলিউশন ও পেস্টিং–জাতীয় দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল। এ কারণে অল্প সময়েই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তবে আগুনের উৎস এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ব্যবসায়ীদের ধারণা, মার্কেটের পেছনের অংশে আছে জুতার কার্টন তৈরির কারখানা। সেখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে কাগজ। রাতে কেউ কেউ সেখানে বসে মাদক সেবন করে। তাঁদের ফেলা সিগারেট থেকেই আগুন লেগে থাকতে পারে।