প্রতিনিধি রাজশাহী
![]() |
রাজশাহীতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণকেন্দ্রে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সীমান্তের পুশ ইনের সংখ্যা বেড়েছে। এ জন্য ভারতকে প্রপার চ্যানেলে পাঠাতে বলা হচ্ছে। কিন্তু তারা সেভাবে পাঠাচ্ছে না।
মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ১৪তম ডেপুটি জেলার এবং ৬২তম কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষীদের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সীমান্তে পুশ ইনের সংখ্যা বেড়েছে। এ জন্য আমরা প্রতিবাদও করেছি। বাট যাঁরা বাংলাদেশি, তাঁরা আমাদেরই ভাই। তাঁদের ক্ষেত্রে আমরা ভারতকে বলছি, তোমরা প্রপার চ্যানেলে পাঠাও। আমরা যেমন অন্য দেশের যাঁরা অবৈধভাবে দেশে থাকেন, তাঁদের একটি প্রপার চ্যানেল দিয়ে পাঠাই। বাট ওনারা এটা করছে না। তবু তাদের বলা হচ্ছে। তোমরা প্রপারভাবে পাঠাও। যদি তাঁরা আমাদের দেশের নাগরিক হয়, তবে অবশ্যই আমরা তাঁদের গ্রহণ করব।’
সীমান্তের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সীমান্তে কোনো ধরনের নিরাপত্তার অভাব নেই; জনগণ সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ। দেশের বাহিনী যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত। সীমান্তে কোনো ধরনের অশান্তি হবে না।
বর্তমানে দেশে ছিনতাই, চুরি, ডাকাতিসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বা শিথিল হয়েছে কি না, জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এটা কোনো কারণেই শিথিল হয়নি। আপনারা একটু সত্য সংবাদটা প্রকাশ করবেন। কোনো সংবাদ একটু বেশি প্রকাশ করা হয়, অতিরঞ্জিত করা হয়, এতে প্রতিবেশী দেশ কিন্তু একটা সুবিধা পেয়ে যায়। আপনারা সত্য সংবাদ প্রকাশ করে আসছেন, এভাবেই প্রকাশ করবেন। এটা যদি জারি রাখেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অন্যান্য জিনিস এখন অনেক উন্নত।’
আসন্ন ঈদের নিরাপত্তা নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, গত ঈদ অনেক ভালো কেটেছে। এই ঈদও যেন একই রকম হয়, এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। এবার ঈদ ও অন্য সময়ও পরিবেশ আরও ভালো থাকবে।
কারাগারকে কারেকশন সেন্টার বা সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা আছে জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এখানে বন্দীরা কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এতে তাঁদের পরিবারের ভরণপোষণ সহজ হয় এবং কারাবন্দীর পরিবেশ আরও উন্মুক্ত হবে।
এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোতাহের হোসেন কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। প্রশিক্ষণে বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক মানের কারা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এ জন্য বন্দীদের নিরাপদ আটক নিশ্চিত করতে মোবাইল জ্যামার, পৃথক ইন্টারনেট সিস্টেম, বডি স্ক্যানার, লাগেজ স্ক্যানার, সারকিট ডিটেক্টরসহ নানা ধরনের আধুনিক নিরাপত্তা সরমঞ্জামের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কারারক্ষীদের সাহসিকতা ও কর্মদক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ জেল মেডেল প্রবর্তনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন অন্য সংস্থার মতো অবসরগামী কারা সদস্যদের আজীবন রেশন প্রদানের বিষয়েও নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, বিজিবির রাজশাহীর সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ইমরান ইবনে আবদুর রউফ, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার প্রমুখ।