প্রতিনিধি মাদারীপুর
এইচএসসি পরীক্ষার একটি কেন্দ্র মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় রাখার দাবিতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ কর্মসূচি পালন করে কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থীরা।
প্রথমে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তাঁরা মিছিল নিয়ে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভুরঘাটা বাসস্ট্যান্ডে অবরোধ করে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় প্রায় আধা ঘণ্টা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়কের দুই পাশে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হলে জন ভোগান্তির সৃষ্টি হয়।
শিক্ষার্থী ও পুলিশের সূত্র জানা গেছে, কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র ডাসার উপজেলায় হয়ে আসছে। কিন্তু ডাসার উপজেলার পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র ডাসারে হয়। এতে নিজ উপজেলায় পরীক্ষার কেন্দ্র না থাকায় শিক্ষার্থীদের যেমন সময় ও অর্থ অপচয় হয়, তেমনি পড়তে হয় ভোগান্তিতে। এ কারণে কালকিনি উপজেলার মধ্যেই এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র রাখার দাবিতে কিছু দিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছে পরীক্ষার্থীরা। ১০ দিন ধরে এ বিষয়ে প্রশাসন আশ্বাস দিলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই আগের ঘোষণা অনুযায়ী আজ কালকিনি উপজেলার ভুরঘাটা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় নানা ধরনের স্লোগান–সংবলিত ব্যানার-ফ্যাস্টুন দেখা যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হাতে। তাঁদের অবস্থানের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে কালকিনি থানার পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার দাশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তাঁদের আশ্বাসে দুপুর ১২টার দিকে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা। তাঁদের দাবি মেনে না দিলে আগামী দিনে স্থায়ীভাবে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধসহ বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী সামি হোসেন বলেন, ‘আমাদের বারবার শুধু আশ্বাসের বাণী দেওয়া হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জোড়ালোভাবে দেখছে না। আমরা কালকিনি উপজেলার শিক্ষার্থী। অথচ আমাদের ডাসার উপজেলায় গিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে কেন? ডাসার উপজেলা থেকে তো আর কেউ কালকিনি উপজেলায় এসে পরীক্ষা দিচ্ছে না। তাহলে আমাদের সঙ্গে কেন এই বৈষম্য। আমরা বৈষম্য চাই না। আমাদের দাবি আদায় না হলে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। প্রয়োজনে দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে দেব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ জানান, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, শিক্ষার্থীরা তাঁদের দাবি আদায়ে মহাসড়ক কিছু সময়ের জন্য অবরোধ করে রেখেছিল। ২০ মিনিটের মতো যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষার্থীদের বোঝানো হলে তাঁরা মহাসড়ক থেকে সরে দাঁড়ান। বর্তমানে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।