প্রতিনিধি পাবনা

আটঘরিয়ায় সংঘর্ষে আহত এক ব্যক্তি | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

পাবনার আটঘরিয়ায় কলেজ পরিচালনা কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার দেবোত্তর বাজার এলাকায় কয়েক দফায় এ সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় উভয় পক্ষের রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলা ও মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেবোত্তর ডিগ্রি অনার্স কলেজ পরিচালনা কমিটিতে অভিভাবক সদস্য নির্বাচন উপলক্ষে তফসিল ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। দুপুরে বিএনপি-সমর্থিত তিনজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। কিছুক্ষণ পর জামায়াতপন্থী একজন প্রার্থীর পক্ষে দলটির কয়েকজন নেতা কলেজে ফরম তুলতে গেলে বিএনপি নেতা-কর্মীরা বাধা দেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় ও ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়।

খবর ছড়িয়ে পড়লে জামায়াত ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে দেবোত্তর বাজারে জড়ো হন। এরপর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি-সমর্থকেরা জামায়াতের কার্যালয়েও ভাঙচুর চালান। পরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় অন্তত ছয়টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয় এবং উভয় দলের কার্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সহসভাপতি ও আটঘরিয়া উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘কলেজ কর্তৃপক্ষ বিএনপি নেতাদের কথামতো না চলায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে অভিভাবক ও জামায়াতপন্থী নেতা-কর্মীদের মারধর করেন।’

তিনি আরও দাবি করেন, ‘এর প্রতিবাদে অভিভাবকেরা ইউএনও’র কাছে স্মারকলিপি দিতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু নামাজের সময় হওয়ায় সবাই মসজিদে যান। এ সময় মসজিদ লক্ষ্য করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা গুলি ও হাতবোমা ছোড়ে।’

তবে মসজিদে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে আটঘরিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মনোয়ার হোসেন আলম বলেন, ‘জামায়াতপন্থীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে অন্তত ১৫ জনকে আহত করেছে। এমনকি আমাদের কার্যালয়ও ভাঙচুর করেছে। আমরা ঘটনার সঠিক তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তি চাই।’

আটঘরিয়া থানার ওসি শফিকুজ্জামান সরকার বলেন, ‘কমিটি গঠন নিয়ে উত্তেজনার জেরে প্রথমে জামায়াতপন্থীরা বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এরপর তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’