প্রতিনিধি ভোলা
![]() |
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়ন (উত্তর) বিএনপির সম্মেলনে চেয়ার ছোড়াছুড়ির পর সংঘর্ষ বাধে। সোমবার বিকেলে উপজেলার চাঁদপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার মাঠে | ছবি: সংগৃহীত |
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়ন (উত্তর) বিএনপির সম্মেলনে দলটির দুই পক্ষের হাতাহাতি ও চেয়ার ছোড়াছুড়ির পর পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ সংঘর্ষের কারণে ওই ইউনিয়ন বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন পণ্ড হয়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়ন (উত্তর) বিএনপি আজ চাঁদপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার মাঠে দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী ছিলেন জাহিদ হাসান (দিদার) ও অরবিন্দ দে (টিটু)। বেলা তিনটার দিকে ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে দলে দলে কর্মী-সমর্থক জাহিদ হাসান ও অরবিন্দ দের পক্ষে মিছিল নিয়ে আসেন। তাঁরা মুখর করে তোলেন সম্মেলনস্থল। সম্মেলনস্থলে প্রভাব বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সমর্থকেরা প্রথম থেকেই ছিলেন মারমুখী। সম্মেলনের বক্তব্য পর্বে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নুর ইসলাম মোল্লা সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম মোস্তফার বক্তৃতার শেষ পর্যায়ে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষ চলাকালে দুই পক্ষই চেয়ার ছোড়াছুড়ি, ভাঙচুর, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, দেশীয় লাঠিসোঁটা নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা করে। এ সময় দুই পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তবে দুই পক্ষের দাবি, আহতের সংখ্যা আরও বেশি।
সভাপতি প্রার্থী জাহিদ হাসান বলেন, ‘সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে আমাদের নিয়ে মাদ্রাসার একটি কক্ষে বসেছিলেন উপজেলার নেতারা। এমন সময় অন্য সভাপতি প্রার্থী অরবিন্দু দের লোকজন বহিরাগতদের নিয়ে দল ভারী করে আমাদের লোকদের ওপর হামলা চালান। তাঁরা লাঠিসোঁটা ও চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে আমাদের ২২ জনকে জখম করেছেন। আহতদের তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে।’
আরেক সভাপতি প্রার্থী অরবিন্দ দে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা কয়েক পুরুষ বিএনপির সমর্থক। আমি নিজে ওয়ার্ড পর্যায় থেকে এখন উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির নির্বাহী সদস্য। সম্মেলনে আমার পক্ষে প্রায় ছয় হাজার মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন। আমার পক্ষে লোকজনের জোয়ার দেখে সম্মেলন পণ্ড করার জন্য আমার প্রতিপক্ষ হামলা করিয়েছে। এতে আমার প্রায় ৫০ জন কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁরা কেউ হাসপাতালে, কেউ স্থানীভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।’
তজুমদ্দিন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব ওমর আসাদ জানান, গত ৩০ এপ্রিল তজুমদ্দিন উপজেলার বড়মলংচড়া ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠন করার মধ্য দিয়ে উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ের সম্মেলন উদ্বোধন হয়। ২ মে চাঁচড়া ইউনিয়ন, ৪ মে বিকেলে সোনাপুর ইউনিয়নে এবং আজ ৫ মে চাঁদপুর (উত্তর) নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সোনাপুর ও চাঁদপুর (উত্তর) ইউনিয়নের সম্মেলন কমিটি ঘোষণা ছাড়াই পণ্ড হয়। পরে বৈঠক করে কমিটি গঠন হবে।
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহব্বত খান জানান, ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপির কমিটি গঠন ও সম্মেলনের বিষয়ে তাঁদের জানানো হয়নি। যদিও জানানোর কথা। এ কারণে চাঁদপুর বিএনপির দুই পক্ষের চেয়ার ছোড়াছুড়ি, সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ উপস্থিত ছিল না। এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। কেউ অভিযোগও করেনি।