[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

জেলের লাশ গুমের অভিযোগে টেকনাফে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ

প্রকাশঃ
অ+ অ-

প্রতিনিধি কক্সবাজার ও টেকনাফ

স্থানীয় জেলেকে হত্যার প্রতিবাদে কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার প্রধান সড়কে মানববন্ধন করেন স্থানীয় লোকজন | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন   

কক্সবাজারের টেকনাফের স্থানীয় এক জেলেকে গুলি করে হত্যার পর লাশ গুমের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায়  মঙ্গলবার দুপুরে টেকনাফ সদরে বিক্ষোভ করেছেন নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় কয়েক শ মানুষ।

বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, মোহাম্মদ তাহের (৪০) নামের ওই জেলেকে কোস্টগার্ড সদস্যরা গুলি করে হত্যার পর লাশ গুম করেছেন। তবে কোস্টগার্ড বলছে, লাশ গুমের এমন অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। জেলে মোহাম্মদ তাহের টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন পল্লানপাড়ার বাসিন্দা।

এ ঘটনায় আজ দুপুরে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ও ‘টেকনাফের সর্বস্তরের জনগণ’–এর ব্যানারে টেকনাফের ঝরনা চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত চলা দেড় ঘণ্টার ওই অবরোধে সড়কের উভয় পাশে কয়েক শ যানবাহন আটকা পড়ে।

সমাবেশে হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগ

বিক্ষোভ সমাবেশে তাহেরের বড় ভাই মোহাম্মদ কাশিম বলেন, সোমবার রাতে তাহেরসহ সাতজন জেলে মাছ ধরতে গেলে কোস্টগার্ডের গুলিতে তাহের ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে লাশটি প্যাকেটে ভরে অটোরিকশায় শাহপরীর দ্বীপের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁরা লাশ বুঝে পাননি।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিনিধি মোরশেদ আলম, ইয়াসিন আরাফাত, জুবায়ের আজিজ, সাইফুল ইকবাল, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, আতাউল্লাহ কাদেরী প্রমুখ।

ছাত্রনেতারা বলেন, এটি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দরকার। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিহত জেলের লাশ ফেরত দেওয়া না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

টেকনাফে জেলে হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে অনুষ্ঠিত হয় বিক্ষোভ সমাবেশ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

সমাবেশে জানানো হয়, তাহেরের লাশ ফেরত পেতে আইনি সহযোগিতা চেয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তাঁর চাচা আশরাফ আলী।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, নিখোঁজ তাহেরের পরিবারের পক্ষে চাচা আশরাফ আলীর একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাতে তাহেরের লাশ ফেরত পেতে আইনি সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কোস্টগার্ডের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। তারা (কোস্টগার্ড) গুলিবিদ্ধ একজনসহ তিনজনকে আটক করার কথা জানিয়েছে। হত্যা করে লাশ গুমের অভিযোগটি অস্বীকার করেছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে।

অভিযোগ ভিত্তিহীন: কোস্টগার্ড

কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সোমবার রাত আড়াইটার দিকে টেকনাফের তুলাতলী ঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে কোস্টগার্ড বাহিনীর সদস্যরা ইঞ্জিনচালিত একটি কাঠের নৌকা থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ৪টি গুলি, ৩০ হাজার ইয়াবা বড়িসহ তিনজনকে আটক করে। তাঁরা হলেন উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের বাসিন্দা মো. ইলিয়াস (৩০), নুর মোহাম্মদ (৬১) ও আবদুল শুক্কুর (৪০)। তাঁদের মধ্যে আবদুল শুক্কুর গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁকে চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

টেকনাফে জেলে হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগ তুলে সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন   

জানতে চাইলে কোস্টগার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘লাশ গুমের এমন অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমরা ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ আবদুল শুক্কুর এবং মো. ইলিয়াস ও নুর মোহাম্মদ নামের তিনজনকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ৪টি গুলি ও ৩০ হাজার ইয়াবাসহ আটক করেছি। তিনজনই মাদক কারবারি। তাঁদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।’

জেলের লাশ গুমের বিষয়ে আজ বিকেল চারটা পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি জানিয়ে টেকনাফ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিমেল রায় বলেন, লাশ গুমের ঘটনায় আজ পৌর শহরে বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ খোঁজখবর নিচ্ছে।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন