নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়, আগারগাঁও, ঢাকা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

আন্দোলন স্থগিত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংস্কার ঐক্য পরিষদ। এর ফলে আগামীকাল সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সারা দেশের সব দপ্তরে পূর্ণদিবস কর্মবিরতির কর্মসূচিও প্রত্যাহার করা হলো।

আজ রাত আটটার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারনের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহবান জানানো হয়।

অবশ্য এর আগে বিকেলে অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এনবিআর নিয়ে জারিকৃত অধ্যাদেশের প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে।

অবশ্য আজ বিকেলে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিল। নতুন কর্মসূচি অনুসারে, আগামীকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দেশের সব শুল্ক-কর কার্যালয়ে কর্মবিরতি চলবে। আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এর আওতায় থাকবে না। এ ছাড়া ওষুধ ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম আমদানিও কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে। আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কার্যক্রম চলবে না।

এরপরই নড়েচড়ে বসে অর্থ মন্ত্রণালয়। সমঝোতার প্রক্রিয়া হিসেবে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আন্দোলনকারীদের আশ্বাস দেওয়া হয়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি বিভাগ করে ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এর পর থেকে এর প্রতিবাদে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছেন রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ জারির প্রতিবাদে আজ সারা দিন আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে কর্মবিরতি চলেছে। বেশির ভাগ শুল্ক-কর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এনবিআরের নিচতলায় প্রধান ফটকের পাশেই সারা দিন অবস্থান করেন। ফলে এনবিআরের কার্যক্রম কার্যত বন্ধ আছে। আজ সকাল থেকে সরেজমিনে গিয়ে এই চিত্র পাওয়া গেছে। গত দুই দিন ধরে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান নিজের কার্যালয়ে আসেননি।

শুধু এনবিআর নয়; ঢাকা কাস্টমস হাউস, চট্টগ্রাম বন্দর, বেনাপোল, ভোমরা স্থলবন্দরসহ দেশের অন্যান্য শুল্ক স্টেশনেও গতকাল সারা দিন কর্মবিরতি চলে। গত কয়েক দিন ধরে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এই আন্দোলন চলছে।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দাবি মূলত চারটি। প্রথমত, জারিকৃত অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করা; দ্বিতীয়ত, অবিলম্বে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা; তিন, রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা; চার, এনবিআরে প্রস্তাবিত খসড়া ও পরামর্শক কমিটির সুপারিশ ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের মতামত নিয়ে রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কার নিশ্চিত করা।