নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
![]() |
সিইসির সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শফিকুর রহমান। নির্বাচন কমিশন, ঢাকা। ১৫ মে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র হতে চান এস এম শফিকুর রহমান। ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জামানত হারিয়েছিলেন তিনি। এখন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে দেখা করে সেই নির্বাচনে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন শফিকুর।
গত শনিবার খুলনায় সংবাদ সম্মেলন করে ২০২৩ সালের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে নিজেকে খুলনা সিটির বৈধ মেয়র হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছিলেন শফিকুর। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করে একই দাবি জানান তিনি।
পরে শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। আপনার চাওয়াটা কী— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, ‘চাওয়াটা হলো, আমি জয়ী হয়েছি, এটাই চাওয়া, এটা ডিক্লেয়ার দেওয়ার জন্য..।’
শফিকুর রহমান বলেন, ছাত্র–জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকার চলে যাওয়ার পর তিনি সিইসি, নির্বাচন কমিশনের সচিব ও স্থানীয় সরকার বিভাগে তিনটি দরখাস্ত করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, তিনি নির্বাচনে পরাজিত হননি। যে ভোট হয়েছে, সেটা গণনা করা হলে তিনি জয়ী হবেন। কোনো জবাব না পেয়ে তিনি উচ্চ আদালতে রিট করেন। তাঁর দাবি, উচ্চ আদালত তাঁর পক্ষে রায় দিয়েছেন। দরখাস্ত ৩টি ৩০ দিনের মধ্যে ‘ডিসপোজাল’ করার জন্য বলেছেন। এ বিষয়ে তিনি আজ সিইসির সঙ্গে দেখা করেছেন। সিইসি তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন, আইনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী ইসি কাজ করবে।
২০২৩ সালের খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ২ লাখ ৫৬ হাজার ২৭৭টি ভোট পড়ে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮২৫ পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আবদুল আউয়াল পেয়েছিলেন ৬০ হাজার ৬৪ ভোট। এ ছাড়া জাতীয় পর্টির শফিকুল ইসলাম ১৮ হাজার ৭৮ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান পান ১৭ হাজার ২১৮ ভোট। ওই নির্বাচনে চতুর্থ স্থানে থাকা শফিকুর জামানত হারান। এর আগে ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনেও জাপার প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে জামানত হারিয়েছিলন তিনি।
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ১৯ অক্টোবর ঢাকা দক্ষিণ, ঢাকা উত্তর, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রংপুর, গাজীপুর ও ময়মনসিংহ—এই ১২ সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার। পরে সিটি করপোরেশনগুলোতে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়।
তবে ৫ আগস্টের পর এখন পর্যন্ত আদালতের রায়ে বিএনপির দুজন প্রার্থীকে দুটি সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করা হয়েছে। গত বছরের ১ অক্টোবর আদালতের রায়ে বিএনপি নেতা শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটির মেয়র ঘোষণা করা হয়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়েছিল ২০২১ সালে। শাহাদাত এখন মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অন্যদিকে ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে গত ২৭ মার্চ মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন আদালত। গত ২৭ এপ্রিল তাঁকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তবে তাঁকে এখনো মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানো হয়নি। ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে আজ সকাল থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের সামনে ও ভেতরে অবস্থান নিয়েছেন তাঁর সমর্থকেরা।