প্রতিনিধি গাজীপুর

গাজীপুরে বকেয়া বেতন ও ভাতার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকেরা। আজ রোববার সকালে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

গাজীপুরের স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড ও ইয়ং ওয়ান্স বিডি লিমিটেডের ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকেরা বকেয়া বেতন ও ভাতার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। আজ রোববার সকালে মহানগরীর তিন সড়ক এলাকায় তাঁরা বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে তাঁরা মেট্রোপলিটন পুলিশ কার্যালয়ের সামনেও অবস্থান নেন।

শ্রমিক ও শিল্প পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, আগে স্টাইল ক্রাফট ও ইয়ং ওয়ান্স বিডি লিমিটেডে ৮ থেকে ১০ হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। তবে করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ায় এবং ব্যাংকিং এলসির জটিলতা ও ঋণের চাপে সময়মতো বেতন পরিশোধ করতে পারেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ। এতে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। ২০২৩ সালে কয়েক দফা শ্রমিক আন্দোলনের পর কর্তৃপক্ষ বিপুলসংখ্যক শ্রমিক ছাঁটাই করে। অনেককে পাওনা পরিশোধ করলেও এখনো প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক তাঁদের বকেয়া বেতন ও অন্যান্য পাওনা পাননি। এসব শ্রমিক বিভিন্ন সময় আন্দোলন করে আসছেন। তাঁরা মালিকের গুলশানের বাসার সামনেও বিক্ষোভ করেছেন।

গতকাল সকালে শ্রমিকেরা আবারও কারখানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে পুলিশ তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। এরপর আন্দোলনকারীরা মেট্রোপলিটন পুলিশ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শ্রমিক হাসি আক্তার বলেন, ‘আমার ১৪ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। ছুটিসহ অন্যান্য পাওনাও দিচ্ছে না। অনেক দিন ধরে আন্দোলন করছি, তবু মালিকপক্ষ টাকা দিচ্ছে না।’

শ্রমিক রুমা আক্তার বলেন, ‘আমার ১৪ মাসের বেতন বকেয়া আছে। এ ছাড়া ছুটিসহ বিভিন্ন পাওনা এখনো পরিশোধ করছে না। দীর্ঘদিন ধরে আমরা আন্দোলন করে আসছি তবু কারখানার মালিক আমাদের টাকা দিচ্ছে না।’ শ্রমিক রুমা আক্তার বলেন, ‘আমরা কাজ করেছি, সেই টাকা চাচ্ছি। এটা পাওয়ার অধিকার আমাদের আছে। টাকা না দিলে আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

এ বিষয়ে স্টাইল ক্রাফট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামস আলমাসের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। কারখানার ব্যবস্থাপক মো. সুজাউদ্দিন ফোন ধরলেও সাংবাদিক পরিচয় জানার পর কেটে দেন।

গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম বলেন, যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা একসময় ওই দুই কারখানার শ্রমিক ছিলেন। অনেকের পাওনা পরিশোধ করা হলেও আন্দোলনকারীদের বকেয়া বেতন ও পাওনা এখনো দেওয়া হয়নি। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।