প্রতিনিধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার এবং উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগসহ চার দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ‘সন্ত্রাসবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’। আজ সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে শাহরিয়ার আলম সাম্যর সহপাঠী, বন্ধুসহ ছাত্রদল এবং বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবিদুর রহমান মিশু, ইশরাত জাহান ইমু, মোস্তাকিম আহমেদ ও রক্তবীজ অর্ক বড়ুয়া।
সংবাদ সম্মেলনে যে চার দফা দাবি তুলে ধরা হয়, সেগুলো হলো দ্রুততম সময়ে জুলাইযোদ্ধা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করা, শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার নিশ্চিতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তরফ থেকে তাঁর পরিবারের সদস্য ও শিক্ষার্থী-শিক্ষক সমন্বয়ে একটি ‘বিচার নিশ্চিতকরণ কমিটি’ গঠন, কমিটির তরফ থেকে নিয়মিত বিচারের অগ্রগতি উত্থাপন করা, তদন্তপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য সংশ্লিষ্ট সিসিটিভি ফুটেজ জনসমক্ষে উন্মোচন করা; দায়িত্ব গ্রহণের ৯ মাসে ক্যাম্পাসে দুই হত্যাকাণ্ডসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে ভিসি ও প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান করা, বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্যাম্পাস–সংলগ্ন এলাকা থেকে উদ্বাস্তু, পথশিশু ও ভ্রাম্যমাণ মানুষদের সরিয়ে পুনর্বাসনের জন্য সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষকে চাপ প্রয়োগ করতে হবে; তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডসহ বিগত ৯ মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বিঘ্নকারী সব ঘটনার যথাযথ বিচার নিশ্চিত করা, তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ড, ফ্যাসিবাদবিরোধী ঘৃণাস্তম্ভ মুছে ফেলা, ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে লাশ ঝুলে থাকা, চারুকলার অভ্যন্তরে মোটিফ পুড়িয়ে ফেলাসহ নিরাপত্তা বিঘ্নকারী সব ঘটনার বিচারের অগ্রগতি অনতিবিলম্বে উত্থাপন করো, বিচার নিশ্চিতে বিলম্বের জন্য দায়ী সবার জবাবদিহি নিশ্চিত করা, ক্ষণিকা বাসে হামলার তদন্তসহ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরেও শিক্ষার্থীরা যেসব নিরাপত্তাঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছেন, সেসব ঘটনার বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা; ক্যাম্পাস এবং নাগরিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তার জন্য কাঠামোগত ও নীতিগত সংস্কার: আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংস্কার, মাদক-সন্ত্রাস দমন, নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ বৃদ্ধি এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও উদ্যানে নিরাপত্তাব্যবস্থাকে প্রযুক্তিনির্ভর করাসহ সার্বিক তৎপরতা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডের পর গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিষয়ে প্রশাসনের ভাষ্য অসংগঠিত ও পরস্পরবিরোধী। কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরের বক্তব্যে সাংঘর্ষিক তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ৯ মাসে দুই খুন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে উপাচার্য ও প্রক্টরের ব্যর্থতা রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চরম গাফিলতি ও খামখেয়ালিপনার পরিচয় দিয়েছে।