মেঘনায় ইলিশের খরা, নিষেধাজ্ঞার পরেও বাজার শূন্য
প্রতিনিধি চাঁদপুর
| মেঘনায় ইলিশ ধরা পড়ছে না। তাই নৌকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন জেলেরা। রোববার সকালে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল এলাকায় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
নিষেধাজ্ঞা শেষে গত বৃহস্পতিবার থেকে মেঘনা নদীতে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জাল ফেলে ইলিশ পাচ্ছেন না জেলেরা। মেঘনায় কার্যত দেখা দিয়েছে ইলিশের খরা। এর প্রভাব পড়েছে স্থানীয় বাজারগুলোয়। মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার মাছের বাজারগুলো চার দিন ধরে প্রায় ইলিশশূন্য। স্থানীয় মৎস্য কর্মকর্তার ভাষ্য, পানির চাপ কম থাকায় জালে ইলিশ ধরা পড়ছে না।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদর বাজারের মাছ বিক্রেতা বিমল দাস বলেন, চার দিন ধরে বাজারে ইলিশ উঠছে না। প্রতিদিন ক্রেতারা এসে ইলিশের খোঁজ নেন, কিনতেও চান। কিন্তু ইলিশের আমদানি নেই। ইলিশের পরিবর্তে অন্য মাছ বিক্রি করছেন।
মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল বাবুরবাজার এলাকার জেলে ফুল চান বর্মণ, আমিরাবাদ এলাকার রিপন বর্মণ, মো. হোসেন, সঞ্জিত বর্মণসহ বিভিন্ন এলাকার কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানালেন, বুধবার মেঘনায় মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার থেকে ইলিশ ধরার জন্য নদীর বিভিন্ন অংশে জাল ফেলেন তাঁরা। গতর খেটে, ট্রলারের ডিজেল খরচ করে প্রতিদিন প্রত্যেক জেলের জালে ইলিশ ওঠে পাঁচ থেকে ছয়টি। এগুলো বিক্রি করে ডিজেলের খরচই মেটে না। প্রতিদিন একেকটি ট্রলারে ডিজেল পুড়িয়ে খরচ পড়ে চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। ধরা পড়া ইলিশ বিক্রি করে পাওয়া যায় তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। ফলে প্রতিদিনই জাল ফেলে লোকসান গুনছেন জেলেরা। পরিবার নিয়েও আছেন বিপাকে।
| রুই–কাতলাসহ বিভিন্ন মাছের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন বিক্রেতা। শুক্রবার সকালে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদর বাজারে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
জেলেদের ভাষ্য, নিষেধাজ্ঞার জন্য দুই মাস মেঘনায় মাছ ধরতে পারেননি। এতে খুব কষ্টে দিন কাটিয়েছেন। পরিবার নিয়ে কোনো কোনো জেলে না খেয়েও ছিলেন। এখন নিষেধাজ্ঞা নেই। অনেক আশা নিয়ে নদীতে জাল ফেলেও ইলিশ পাচ্ছেন না। সংসার চলাবেন কীভাবে? তাই তাঁরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
রোববার সকালে মতলব উত্তর উপজেলার সুজাতপুর, ছেংগারচর ও আমিরাবাদ এবং মতলব দক্ষিণের উপজেলা সদর, বরদিয়া আড়ং, মুন্সিরহাট ও নারায়ণপুর মাছের বাজারে গিয়ে ইলিশ মাছ দেখা যায়নি। ক্রেতারা ইলিশের পরিবর্তে অন্যান্য মাছ কিনে নিচ্ছেন।
মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, মেঘনায় পানির চাপ কম থাকায় এখন তেমন ইলিশ ধরা পড়ছে না। বাজারেও ইলিশ আসছে না। সামনে পূর্ণিমা। তখন নদীতে পানির চাপ বাড়বে। তখন প্রত্যাশিত ইলিশও পাওয়া যাবে।
Comments
Comments
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন