প্রতিনিধি রাজশাহী

রাজশাহী মহানগর বিএনপির কমিটি, থানা ও ওয়ার্ড কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপির একটি অংশ। শনিবার বিকেলে নগরের বাটার মোড়ে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

রাজশাহী মহানগর, থানা ও ওয়ার্ডের আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে শনিবার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপির একটি পক্ষ। ‘বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন’–এর ব্যানারে বিকেলে রাজশাহী নগরের বাটার মোড়ে এই সমাবেশ হয়। পরে সন্ধ্যায় সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে এসে শেষ হয়।

সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির বোয়ালিয়া থানার সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান, মতিহার থানার সাবেক সভাপতি আনসার আলী, রাজপাড়া থানার সাবেক সভাপতি শওকত আলী, শাহ মখদুম থানার সাবেক সভাপতি আবদুল মাসুদ, মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

সমাবেশে সাইদুর রহমান বলেন, বর্তমানে মহানগর বিএনপির যে আহ্বায়ক কমিটি রয়েছে, এটা অযোগ্য কমিটি। ১৭ বছর আন্দোলনে তাঁদের কোনো কিছু (অবদান) ছিল না, মামলাও ছিল না। আজ যাঁরা বিক্ষোভ–সমাবেশ করছেন, তাঁদের সবার নামে কমপক্ষে ৫টি করে মামলা আছে। বিগত কমিটিতে মিজানুর রহমান (মিনু), মোসাদ্দেক হোসেন (বুলবুল), শফিকুল হকের (মিলন) মতো নেতা ছিলেন। কেন্দ্র থেকে এখনো যাচাই করলে দেখতে পারবে, আগের কমিটির লোকজন এখনো কত জনপ্রিয়। নতুন আহ্বায়ক কমিটি আসার পরই থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গায়ের জোরে বাতিল করেছে, এটা তাদের এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না। বর্তমান কমিটিতে আওয়ামী লীগের দোসরদের নেওয়া হয়েছে। টাকার বিনিময়ে কমিটি–বাণিজ্য করা হয়েছে।

সাইদুর রহমান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন আওয়ামী লীগের দোসর দিয়ে কমিটি দেওয়ার কারণে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। তাই তাঁর বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ৭ দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে।

‘বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন’–এর ব্যানারে রাজশাহী নগরের বাটার মোড়ে সমাবেশ হয়। শনিবার বিকেলে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘রাজশাহীর পবায় যুবদলের নেতা সালাহউদ্দিন মিন্টুকে একদল সন্ত্রাসী খোঁজ করতে গিয়েছিল। সেদিন মিন্টু বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর বৃদ্ধ বাবা দরজা খুলে দিলে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেখানে কার নেতৃত্বে গুলি হয়েছে? এটা ছিল বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির মামুন-অর-রশিদের বডিগার্ড। এই হচ্ছে রাজশাহী মহানগর বিএনপির অবস্থা।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখানে যাঁরা আছেন, তাঁরা কোনো পদ–পদবিতে নেই। যাঁরা কমিটিতে আছেন, তাঁদের লক্ষ্য বিএনপিকে কলুষিত করা। যাঁরা মনে করছেন, বিএনপিকে ছোট ও খাটো করবেন, তাঁরা মনে রাখবেন, খুনি হাসিনা টিকতে পারেননি, আপনাদের এক ঘণ্টার নোটিশে রাজশাহীছাড়া করতে পারি। আর সহ্য করা যাবে না। এই সন্ত্রাসী, দখলবাজ, চাঁদাবাজেরা বিএনপির নেতা হতে পারেন না। অতীতে যাঁরা কমিটিতে ছিলেন, তাঁরা শিক্ষিত ও জনপ্রিয় ছিলেন। এঁরা (নতুন কমিটির নেতা) বিচ্ছিন্ন। এঁরা আমাদের নেতা হতে পারেন না। আমরা রাজশাহীতে রক্তপাত চাই না। এটি শান্তির শহর। সে জন্য সাবধান করে দিয়ে বলতে চাই, সম্মান থাকতে বিদায় নিন।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির রাজশাহী মহানগর কমিটির আহ্বায়ক এরশাদ আলী বলেন, তাঁদের কমিটি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজে গঠন করে দিয়েছেন। তাঁরা রাজশাহী মহানগরে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। আজ যাঁরা কর্মসূচি করছেন, তাঁরা বিএনপির কেউ হতে পারেন না, তাঁরা বিএনপিকে খাটো করছেন। যদি এখানে বিএনপির কেউ থাকেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।