নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা

জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া তরুণদের একটি পক্ষের উদ্যোগে ‘ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ)’–এর আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে মঞ্চে নতুন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা। আজ শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন 

ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদ, ধর্মবিদ্বেষ ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়া—এই চার বিষয় সামনে রেখে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ)’। শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আপ বাংলাদেশের ৮২ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘শহীদ পরিবারের প্রতি আমাদের শপথ—তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করাই হবে আমাদের রাজনীতি।’

বিকেল সাড়ে চারটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নতুন সংগঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন এর প্রধান উদ্যোক্তা আলী আহসান জুনায়েদ। ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি আলী আহসান জুনায়েদ নতুন সংগঠনটির আহ্বায়ক হয়েছেন। সংগঠনের ৮২ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্যসচিব হয়েছেন আরেফিন মুহাম্মদ হিজবুল্লাহ। এ ছাড়া রাফে সালমান রিফাত প্রধান সমন্বয়কারী, নাঈম আহমেদ প্রধান সংগঠক এবং শাহরীন ইরা মুখপাত্র হয়েছেন। তাঁরা জুলাই অভ্যুত্থানে সক্রিয় ছিলেন। রাফে সালমান রিফাতও একসময় ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন।

আপ বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, আহত ও শহীদদের পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে সংগঠনটির আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘জুলাইকে কেন্দ্র করেই আমাদের এই রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম। জুলাইয়ের শপথে আমরা আজ শপথ নিচ্ছি। শহীদ পরিবারের প্রতি আমাদের শপথ—তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করাই হবে আমাদের রাজনীতি। এ ছাড়া অন্য কোনো রাজনীতি আমরা করব না। তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করাই আমাদের রাজনীতি।’

আপ বাংলাদেশ মূলত একটি ‘পলিটিক্যাল প্রেশার গ্রুপ’ হিসেবে কাজ করবে বলে উল্লেখ করেন আলী আহসান জুনায়েদ। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করেছি, জুলাইয়ের স্পিরিটকে (চেতনা) কেন্দ্র করে জুলাইয়ের দাবিকে কেন্দ্র করে একটা প্ল্যাটফর্ম প্রয়োজন। আমরা আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে একটা কার্যকর অবস্থান নিতে চাই।’

আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, পিলখানা, শাপলা ও জুলাই গণহত্যার মতো ভয়াবহ অপরাধের বিচার, ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা এবং জুলাইয়ের আহত যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার দাবিতে জনমত ও রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলা তাঁদের প্রাথমিক লক্ষ্য থাকবে।

জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ আসহাবুল ইয়ামিনের বাবা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে যেসব নারী–পুরুষ ও শিশু শহীদ হয়েছে, তাদের রক্তের ওপর আজকের এই বাংলাদেশ। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এখনো সরকারে আওয়ামী প্রেতাত্মা রয়ে গেছে। এদেরকে এ দেশ থেকে নির্বাসিত করে দেওয়া হোক। কেননা আওয়ামী লীগ নামে কোনো দল থাকতে পারবে না।’

পিলখানায় নিহত সুবেদার নুরুল ইসলামের সন্তান আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিচার চেয়ে শেখ হাসিনাসহ মোট ৫৮ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেছি। একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশনও হয়েছে। আশা করি, আমরা সুষ্ঠু বিচার পাব। আমরা শেখ হাসিনার আমলের সব গুম, খুন, হত্যার বিচার চাই।’