![]() |
বর্তমান নাম জেলা স্টেডিয়াম পাবনা | ছবি: লেখক |
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীনের পর, শহীদ এডভোকেট আমিন উদ্দিনের স্মৃতিকে চিরস্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে পাবনা আইন কলেজের নাম পরিবর্তন করে 'শহীদ এডভোকেট আমিন উদ্দিন আইন কলেজ' এবং পাবনার প্রধান স্টেডিয়াম 'জিন্নাহ পার্কে'র নাম পরিবর্তন করে 'শহীদ এডভোকেট আমিন উদ্দিন স্টেডিয়াম' রাখা হয়েছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী বীর আমিন উদ্দিনকে দেশের মানুষ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাঝে অম্লান ও অমর করে রাখার উদ্দেশ্যেই এই নামকরণ করা হয়।
কিন্তু ২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের পর, মুছে ফেলা হলো সেই নাম। কেন মুছে ফেলা হলো? কারা এই উদ্যোগ নিলো? একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম মুছে ফেলার পরেও মুক্তিযোদ্ধারা কোনো প্রতিবাদ করলেন না কেন? শুধু আওয়ামী ঘরানার লোকজনই নয়, বিএনপির পক্ষের মুক্তিযোদ্ধাদের কাছেও কি এই কাজটি লজ্জাজনক নয়?
বিষয়টি কয়েকদিন ধরেই গভীরভাবে ভাবাচ্ছে।
২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে দেশে একের পর এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে চলেছে, এবং এখনও প্রতিনিয়ত ঘটছে। তবে এসব সব কিছু নীতিগতভাবে সঠিকভাবে ঘটেছে—এমন কথা কেউ বুক ঠুকে বলতে পারবে না। কারণ, এটাই নির্মম বাস্তবতা।
হাজারো ঘটনার ভিড়ে, দেশের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক যে বিষয়ের উত্থান ঘটেছে, তার নাম—‘মব জাস্টিস’। এই মবই আজ দেশের আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতির মূল উৎস। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো—যারা এই মব কালচার সৃষ্টি করেছে এবং বৈধতা দিয়েছে, তারাই আজ মবের শিকার হচ্ছেন, বা ভবিষ্যতে হবেন, শুধুমাত্র এই আইন-শৃঙ্খলার দুরবস্থার কারণেই। এমন প্রমাণ প্রতিনিয়তই সামনে আসছে।
কিন্তু ২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের পর, মুছে ফেলা হলো সেই নাম। কেন মুছে ফেলা হলো? কারা এই উদ্যোগ নিলো? একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম মুছে ফেলার পরেও মুক্তিযোদ্ধারা কোনো প্রতিবাদ করলেন না কেন? শুধু আওয়ামী ঘরানার লোকজনই নয়, বিএনপির পক্ষের মুক্তিযোদ্ধাদের কাছেও কি এই কাজটি লজ্জাজনক নয়?
বিষয়টি কয়েকদিন ধরেই গভীরভাবে ভাবাচ্ছে।
২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে দেশে একের পর এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে চলেছে, এবং এখনও প্রতিনিয়ত ঘটছে। তবে এসব সব কিছু নীতিগতভাবে সঠিকভাবে ঘটেছে—এমন কথা কেউ বুক ঠুকে বলতে পারবে না। কারণ, এটাই নির্মম বাস্তবতা।
হাজারো ঘটনার ভিড়ে, দেশের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক যে বিষয়ের উত্থান ঘটেছে, তার নাম—‘মব জাস্টিস’। এই মবই আজ দেশের আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতির মূল উৎস। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো—যারা এই মব কালচার সৃষ্টি করেছে এবং বৈধতা দিয়েছে, তারাই আজ মবের শিকার হচ্ছেন, বা ভবিষ্যতে হবেন, শুধুমাত্র এই আইন-শৃঙ্খলার দুরবস্থার কারণেই। এমন প্রমাণ প্রতিনিয়তই সামনে আসছে।
দ্বিতীয়ত, বর্তমানে যে বিষয়টি ঘটছে, তা হলো—২৪-এর আন্দোলন দিয়ে ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধকে প্রতিস্থাপন করার চেষ্টা, অথবা উভয়কে সমান মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস। ২৪-এর আন্দোলন ও এর মাধ্যমে অর্জিত বিজয় নিঃসন্দেহে একটি স্বৈরাচারী শাসকের পতনের লড়াই ছিল। এরপর আপনি শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার বলতেই পারেন, খুনের নির্দেশদাতা বলতেও পারেন, কিংবা আওয়ামী লীগ সরকারের নানা কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করতেই পারেন। এমনকি স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর কিছু কর্মকাণ্ডকেও আপনি প্রশ্নবিদ্ধ করতেই পারেন।
কিন্তু, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধ-পূর্ব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আপনি অস্বীকার করতে পারেন না। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি মানুষ—তা তিনি মেজর জিয়া হোন কিংবা গ্রামের একেবারে সাধারণ কৃষক-শ্রমিক থেকে উঠে আসা এক মুক্তিযোদ্ধা—তাঁদের অবদান আপনি কখনোই খাটো করে দেখতে পারেন না। কারণ, এটি ছিল একটি জাতির স্বাধীনতার জন্য লড়াই—একটি রাষ্ট্রের জন্মযুদ্ধ।
যুগে যুগে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে। কিন্তু স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ একটি দেশের ইতিহাসে একবারই ঘটে। যারা ২৪-এর আন্দোলনকে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সমতুল্য ভাবেন, তাদের জন্য সত্যিই করুণা হয়। তাদের জ্ঞান-বুদ্ধির স্তর দেখে তাদের সঙ্গে যুক্তিপূর্ণ আলোচনা চালিয়ে যাওয়ারও আর ইচ্ছা জাগে না।
২৪-এর আন্দোলন নিঃসন্দেহে একটি বড় জাতীয় উদাহরণ এবং অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। এটি ভবিষ্যতের কোনো সরকারকে স্বৈরাচারী হয়ে উঠা থেকে বিরত রাখতে জনগণকে সাহস যোগাবে। তবে ২৪ কখনোই ৭১ কে ঢেকে দিতে পারে না। যারা তা মনে করেন, বুঝে নিতে হবে—তারা কখনোই দেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন না, এখনও নন।
শেখ হাসিনার বিরোধিতা করতে গিয়ে বা আওয়ামী লীগকে মুছে ফেলতে গিয়ে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান ও স্মৃতি মুছে দেওয়ার প্রয়াস কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। যারা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি মুছে দিয়ে আবার অতীতে ফিরতে চান, বা ২৪-এর মাধ্যমে সেটিকে ঢাকতে চান, তাদের উদ্দেশ্য দেশপ্রেম নয় বলেই আমি মনে করি।
অবশ্যই সত্য, মুক্তিযুদ্ধ ও এর চেতনাকে আওয়ামী লীগ দলীয়করণ করেছে, যার ফলে জনগণের একটা বিরাগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে এখন দেখা যাচ্ছে—বিভিন্ন পক্ষ ২৪-এর চেতনাকেও ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইছে, যা জনগণের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে বা খুব দ্রুত করবে। বাস্তবতা বর্জিত অতিরিক্ত কোনো কিছুই কল্যাণকর নয়।
তাই, যারা ভাবছেন ৭১-এর শহীদ আমিন উদ্দিনের নামে নামকরণকৃত স্থাপনার নাম পরিবর্তন করে আবার পাকিস্তান আমলের ‘জিন্নাহ পার্ক’ ফিরিয়ে আনবেন, কিংবা ২৪-এর কোনো শহীদের নাম দেবেন, তারা অনুরোধ করে আগে শহীদ আমিন উদ্দিনের জীবনের ইতিহাস একবার পড়ে নিন। তার কি অবদান ছিল পাবনার জন্য? দেশের জন্যই বা কি করেছেন? নাকি জাতি হিসেবে আমরা চির অকৃতজ্ঞ এবং বেইমান?
মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী বীর শহীদ অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিনকে সম্মান জানিয়ে পাবনার স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়েছিল ‘শহীদ অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন স্টেডিয়াম’। সেই নাম মুছে দিয়ে আমরা জাতি হিসেবে প্রমাণ করলাম—আমরা কতটা অকৃতজ্ঞ এবং বিশ্বাসঘাতক!
আজ আমরা সেই মুক্তিযোদ্ধাদেরই কতটুকু সম্মান দিচ্ছি, যাঁরা তাঁদের জীবনের বিনিময়ে আমাদের একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন?
দেশের পপ ও ব্যান্ড গানের জনক, আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা গুরু আজম খানের কথায় তাই বলতে হয়— “হায় আমার বাংলাদেশ, হায়রে হায় বাংলাদেশ!”
কিন্তু, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধ-পূর্ব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আপনি অস্বীকার করতে পারেন না। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি মানুষ—তা তিনি মেজর জিয়া হোন কিংবা গ্রামের একেবারে সাধারণ কৃষক-শ্রমিক থেকে উঠে আসা এক মুক্তিযোদ্ধা—তাঁদের অবদান আপনি কখনোই খাটো করে দেখতে পারেন না। কারণ, এটি ছিল একটি জাতির স্বাধীনতার জন্য লড়াই—একটি রাষ্ট্রের জন্মযুদ্ধ।
যুগে যুগে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে। কিন্তু স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ একটি দেশের ইতিহাসে একবারই ঘটে। যারা ২৪-এর আন্দোলনকে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের সমতুল্য ভাবেন, তাদের জন্য সত্যিই করুণা হয়। তাদের জ্ঞান-বুদ্ধির স্তর দেখে তাদের সঙ্গে যুক্তিপূর্ণ আলোচনা চালিয়ে যাওয়ারও আর ইচ্ছা জাগে না।
২৪-এর আন্দোলন নিঃসন্দেহে একটি বড় জাতীয় উদাহরণ এবং অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। এটি ভবিষ্যতের কোনো সরকারকে স্বৈরাচারী হয়ে উঠা থেকে বিরত রাখতে জনগণকে সাহস যোগাবে। তবে ২৪ কখনোই ৭১ কে ঢেকে দিতে পারে না। যারা তা মনে করেন, বুঝে নিতে হবে—তারা কখনোই দেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন না, এখনও নন।
শেখ হাসিনার বিরোধিতা করতে গিয়ে বা আওয়ামী লীগকে মুছে ফেলতে গিয়ে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান ও স্মৃতি মুছে দেওয়ার প্রয়াস কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। যারা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি মুছে দিয়ে আবার অতীতে ফিরতে চান, বা ২৪-এর মাধ্যমে সেটিকে ঢাকতে চান, তাদের উদ্দেশ্য দেশপ্রেম নয় বলেই আমি মনে করি।
অবশ্যই সত্য, মুক্তিযুদ্ধ ও এর চেতনাকে আওয়ামী লীগ দলীয়করণ করেছে, যার ফলে জনগণের একটা বিরাগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে এখন দেখা যাচ্ছে—বিভিন্ন পক্ষ ২৪-এর চেতনাকেও ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইছে, যা জনগণের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে বা খুব দ্রুত করবে। বাস্তবতা বর্জিত অতিরিক্ত কোনো কিছুই কল্যাণকর নয়।
তাই, যারা ভাবছেন ৭১-এর শহীদ আমিন উদ্দিনের নামে নামকরণকৃত স্থাপনার নাম পরিবর্তন করে আবার পাকিস্তান আমলের ‘জিন্নাহ পার্ক’ ফিরিয়ে আনবেন, কিংবা ২৪-এর কোনো শহীদের নাম দেবেন, তারা অনুরোধ করে আগে শহীদ আমিন উদ্দিনের জীবনের ইতিহাস একবার পড়ে নিন। তার কি অবদান ছিল পাবনার জন্য? দেশের জন্যই বা কি করেছেন? নাকি জাতি হিসেবে আমরা চির অকৃতজ্ঞ এবং বেইমান?
মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী বীর শহীদ অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিনকে সম্মান জানিয়ে পাবনার স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়েছিল ‘শহীদ অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন স্টেডিয়াম’। সেই নাম মুছে দিয়ে আমরা জাতি হিসেবে প্রমাণ করলাম—আমরা কতটা অকৃতজ্ঞ এবং বিশ্বাসঘাতক!
আজ আমরা সেই মুক্তিযোদ্ধাদেরই কতটুকু সম্মান দিচ্ছি, যাঁরা তাঁদের জীবনের বিনিময়ে আমাদের একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন?
দেশের পপ ও ব্যান্ড গানের জনক, আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা গুরু আজম খানের কথায় তাই বলতে হয়— “হায় আমার বাংলাদেশ, হায়রে হায় বাংলাদেশ!”
[মতামত লেখকের নিজস্ব]