প্রতিনিধি রাজশাহী
![]() |
রাজশাহী নার্সিং কলেজে নার্সিংয়ের বিএসসি ও ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছবিটি নার্সিং কলেজের সামনে থেকে তোলা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
রাজশাহী নার্সিং কলেজে বিএসসি ও ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তাঁরা নার্সিং কলেজে ভাঙচুর চালিয়েছেন। এক পক্ষ পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজেও হামলা চালিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করেছে। এর মধ্যে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে।
সংঘর্ষের সময় কলেজের বিএসসি নার্সিং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের কিছু নার্স। পরে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে পাল্টা হামলা চালান। এ ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলছে কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা জানান, দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে তাঁরা আন্দোলন নিয়ে কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন। তখন হঠাৎ সেখানে এসে উপস্থিত হন বিএসসি ইন নার্সিংয়ের কিছু শিক্ষার্থী। তাঁরা বাগ্বিতণ্ডা শুরু করেন। বিএসসির শিক্ষার্থীরা ডিপ্লোমার শিক্ষার্থীদের কটূক্তি করেন। একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে হাসপাতাল থেকে কয়েকজন বিএসসি নার্সও এসে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। তাঁরা ফটক ভেঙে কলেজেও ভাঙচুর চালান। ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাঁদের শ্লীলতাহানিও করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষ ও ভাঙচুর শুরু হলে আট ভ্যান পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এর মধ্যে আহত ব্যক্তিদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখন ডিপ্লোমা ইন নার্সিংয়ের শিক্ষার্থীরাও হাসপাতালে যান। একপর্যায়ে তাঁরা ৪ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে কয়েকজন বিএসসি নার্সকে লাঞ্ছিত করেন। এ ছাড়া বিএসসি নার্সরা ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছেন, এমন অভিযোগে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহম্মদের কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখন সেনাবাহিনীর একটি দল এসে তাঁদেরকে আটকে দেন। পরে পরিচালক কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহম্মদ বলেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। এ ঘটনার তদন্ত হবে। দুই পক্ষের যাঁরা যাঁরা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাঁদের শাস্তি হবে। নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম বলেন, ‘দুই পক্ষের প্রায় ১০ জন আহত হয়েছেন। আমরা খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে এসে দুই পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। কিন্তু ডিপ্লোমার শিক্ষার্থীরা আবার হাসপাতালে গিয়ে ঝামেলা করছিলেন। সেটাও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এটা কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যাপার। তারা বিষয়টি দেখবে।’
রাজশাহী নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ মতিয়ারা খাতুন জানান, ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা তাঁদের পড়াশোনা শেষ করে বিএর সমমান চান। আর বিএসসি নার্স ও বিএসসি নার্সিংয়ের শিক্ষার্থীরা এটির বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষেরই টানা আন্দোলন কর্মসূচি চলছে। এর জের ধরেই দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। মতিয়ারা খাতুন বলেন, ‘সংঘর্ষ শুরুর সময় আমি একটা মিটিংয়ে ছিলাম। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’