প্রতিনিধি কিশোরগঞ্জ

আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন নেতারা। বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা পাবলিক লাইব্রেরির সামনে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

কিশোরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটি থেকে ৫৬ জন নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা পাবলিক লাইব্রেরির সামনে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন ও সদস্যসচিব ফয়সাল প্রিন্সের বিরুদ্ধে মামলা–বাণিজ্য, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব মামুন মিয়া ও সংগঠক রিয়াদ আহমেদকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে তাঁরা পদত্যাগ করছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। একই সঙ্গে জেলা কমিটি বাতিলের দাবিও জানান তাঁরা। পদত্যাগ করা নেতাদের মধ্যে আটজন যুগ্ম আহ্বায়ক, আটজন যুগ্ম সদস্যসচিব, চারজন সংগঠক ও বাকিরা সদস্য।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সদ্য পদত্যাগ করা যুগ্ম আহ্বায়ক আলী রাইয়ান, যুগ্ম সদস্যসচিব মামুন মিয়া, সংগঠক শারমিন আক্তার ও সদস্য হাসিবুল হোসাইন। এ সময় জানানো হয়, তাঁরা বিকেল চারটায় পাবলিক লাইব্রেরিতে সংবাদ সম্মেলনের জন্য মিলনায়তন ভাড়া নিয়েছিলেন। কিন্তু দুপুরে লাইব্রেরি তালা দিয়ে চলে যায় কর্তৃপক্ষ। তাঁরা লাইব্রেরিতে ঢুকতে না পেরে লাইব্রেরির সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করছেন। জেলা কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব কর্তৃপক্ষকে চাপ দিয়ে মিলনায়তন বন্ধ করেন বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন ও সদস্যসচিব ফয়সাল প্রিন্সের দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, মামলা–বাণিজ্য, নিরীহ মানুষকে হয়রানি, দখল–বাণিজ্য, অবৈধভাবে হাটবাজার নিয়ন্ত্রণ এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে সংগঠনের ভেতর থেকে এর প্রতিবাদ ওঠে। এ কারণে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব মামুন মিয়া ও সংগঠক রিয়াদ আহমেদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে অবৈধভাবে বহিষ্কার করেন আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব। তাঁরা দুজন স্বৈরাচারী কায়দায় সংগঠন চালাচ্ছেন। ৩২১ সদস্যের কমিটিতে ১০০ জনের নামই ভুয়া। বাস্তবে তাঁদের কোনো অস্তিত্ব নেই। তা ছাড়া জুলাই আন্দোলনে সদস্যসচিব ফয়সাল প্রিন্সের কোনো অংশগ্রহণ ছিল না। তিনি পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কমিটির সদস্যসচিব বনে যান। এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা পদত্যাগ করছেন।

অভিযোগের বিষয়ে আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কৃত মামুন ও রিয়াদই মূলত মামলা–বাণিজ্য ও নানা অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। আর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত চার-পাঁচজন সংগঠনের সদস্য। বাকিরা ভুয়া। আমি কোনো অনিয়ম-দুর্নীতিতে যুক্ত নই। স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সংগঠন চালাচ্ছি।’

লাইব্রেরি মিলনায়তনের বুকিং বাতিলের বিষয়ে জেলা পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক মু. আ. লতিফ বলেন, সংবাদ সম্মেলন নিয়ে দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান ও হাঙ্গামার আশঙ্কা থাকায় সংবাদ সম্মেলনের বুকিং বাতিল করা হয়।