প্রতিনিধি খুলনা
![]() |
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে আজ রোববার শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা শেষে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয় | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) এবার প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষক সমিতি। আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা শেষে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে শিক্ষক লাঞ্ছিত করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত ছিলেন শিক্ষকেরা।
এ ছাড়া আগামীকাল সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে সংঘর্ষ ও শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের বিচারিক কার্যক্রম শেষ না হলে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষক সমিতি।
আজ দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষকেরা। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত শিক্ষক সমিতির ওই সভা চলে।
শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় আইনের বাইরে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন দোষী ব্যক্তিদের বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত করে রেখেছে। যার কারণে কুয়েটের শিক্ষা কার্যক্রম সংকটের মধ্যে পড়েছে। মাত্র কয়েকজন শিক্ষার্থীর স্বার্থ রক্ষায় ও ওপরমহল নামক অদৃশ্য শক্তিকে তুষ্ট করছে বর্তমান প্রশাসন। আগামীকাল দুপুর ১২টার মধ্যে প্রশাসন কোনো সন্তোষজনক সিদ্ধান্ত না নিলে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষক সমিতি।
সভা শেষে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আশাহত হয়ে বলছি, এই সংকট নিরসনে প্রশাসনের কোনো প্রকার আগ্রহ নেই; সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এমতাবস্থায় আমরা গতকাল শনিবার ও আজ ভিসি মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলি। আমরা দেখেছি, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শোকজ নোটিশ করা এবং এর জবাবদানের সময়সীমা পার হলেও পরে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে বর্তমান প্রশাসন তার একক সিদ্ধান্তে বিচারপ্রক্রিয়াকে বন্ধ করে রেখেছে।’
এদিকে একাডেমিক কার্যক্রম চালু, নতুন একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন ও আগে ঘোষিত পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।
এই কর্মসূচি চলাকালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাঁদের উদ্বেগের কথা জানান। তাঁরা বলেন, সাবেক উপাচার্যের পতনের পর নতুন উপাচার্য আসার পরেও সেই পুরোনো প্রহসনের তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে তাঁদের কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠানো হয়েছে। দফায় দফায় তাঁরা স্থানীয় লোকজনের হামলার হুমকিও পাচ্ছেন। ৪ মে ক্লাস শুরুর কথা থাকলেও এখনো শুরু হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা আতঙ্কিত। দ্রুত এ অবস্থার অবসান চান তাঁরা।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিকে কেন্দ্র করে কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে শতাধিক মানুষ আহত হন। পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তৎকালীন উপাচার্য ও সহ–উপাচার্যকে সরিয়ে দেয় সরকার। এরপর ১ মে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) অধ্যাপক মো. হযরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।