প্রতিনিধি চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুরে প্রায় আধা ঘণ্টা তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটসংলগ্ন সড়ক অবরোধ করে রাখেন। ওই সময় চট্টগ্রাম থেকে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি সড়কে চলাচলকারী যানবাহনসহ আশপাশের লোকজন আটকা পড়েন।
অবরোধে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. উলফাতুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচ শিক্ষার্থী সাত দিন ধরে নিখোঁজ। প্রশাসন এখনো তাঁদের উদ্ধার করতে পারেনি। এর প্রতিবাদে তাঁরা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন। অবিলম্বে পাঁচ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করতে হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে উদ্ধার না হলে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন তাঁরা।
পুলিশ ও অবরোধে অংশ নেওয়াদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেইট সংলগ্ন চট্টগ্রাম-রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। এ সময় সড়কের উভয় পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় আধঘণ্টা পর দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই এ অবরোধ শেষ হয়।
অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (হাটহাজারী অঞ্চল) কাজী মো. তারেক আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, পাঁচ শিক্ষার্থীকে উদ্ধারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি দল অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। পরে তারা সরে যান।
বিজু উৎসব উদ্যাপন শেষে ফেরার পথে ১৬ এপ্রিল সকালে খাগড়াছড়ির গিরিফুল এলাকা থেকে পাঁচ শিক্ষার্থী ও তাঁদের বহন করা অটোরিকশার চালককে অজ্ঞাত স্থানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন পিসিপির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র রিশন চাকমা, চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা ও অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অপহরণকারীরা চালককে ছেড়ে দিলেও পাঁচ শিক্ষার্থীর খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় শুরু থেকে ইউপিডিএফকে দায়ী করে আসছে জেএসএস—সন্তু লারমা সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি নিপুন ত্রিপুরা। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন ইউপিডিএফের অন্যতম জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা। তিনি বলেন, ‘অপহরণের সঙ্গে আমাদের সংগঠনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এ ধরনের প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি আমাদের দল করে না। আমরা শুরু থেকে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতের বিপক্ষে।’