প্রতিনিধি বরিশাল

দুই দফা দাবিতে বরিশাল সিটি করপোরেশনের চাকরিচ্যুত কর্মচারীদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। ফজলুল হক অ্যাভিনিউ, বরিশাল নগর, ২২ এপ্রিল | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

বরিশাল সিটি করপোরেশন থেকে চাকরিচ্যুত কর্মচারীদের চাকরিতে পুনর্বহাল ও বকেয়া বেতন–ভাতার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন চাকরিচ্যুত ১৬০ কর্মচারী। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরের ফজলুল হক অ্যাভিনিউয়ে নগর ভবন–সংলগ্ন সড়ক ও গির্জা মহল্লা সড়ক এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অবরোধ করে তাঁরা বিক্ষোভ করেন। এতে নগরের অভ্যন্তরীণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করে আসছিলেন। অনেকেই পৌরসভা আমল থেকে শহর পরিচ্ছন্নতার কাজে যুক্ত। তাঁদের অভিযোগ, কোনো ধরনের সার্ভিস বেনিফিট, গ্র্যাচুইটি বা চাকরিচ্যুতির নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ গত জানুয়ারিতে তাঁদের চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়। শ্রম আইন অনুযায়ী, কোনো কর্মী ছয় মাসের বেশি সময় কাজ করলে বা চুক্তি না থাকলেও তাঁকে স্থায়ী কর্মী হিসেবে গণ্য করা উচিত বলে তাঁরা মনে করেন।

বিক্ষোভের সময় চাকরিচ্যুত কর্মচারীরা বিনা নোটিশে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া ও দুই মাসের বকেয়া বেতন না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দ্রুত তাঁদের দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) বরিশাল জেলা শাখার সমন্বয়ক মনীষা চক্রবর্তী ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। মনীষা চক্রবর্তী বলেন, শ্রমিকদের প্রতি এই অমানবিক আচরণ বরদাশত করা যায় না। শ্রমিকেরা যদি বছরের পর বছর সিটি করপোরেশনের কাজ করেন, তাহলে তাঁদের সঙ্গে এমন ব্যবহার অমানবিক ও বেআইনি।

সমাবেশে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকনেতা হোসেন ঢালী বলেন, শ্রমিকদের মধ্যে যাঁরা কর্মক্ষম, তাঁদেরও চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের দুই মাসের বেতন–ভাতা বকেয়া। তাঁরা দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান চান।

চাকরিচ্যুত শ্রমিক সেলিম হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের দুই মাসের বেতন বকেয়া থাকলেও পরিশোধ করা হচ্ছে না। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আলোচনা চালিয়েও কোনো ফল পাইনি।’

জানতে চাইলে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারি বলেন, চাকরি হারানো শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ–আলোচনায় চূড়ান্ত হয়েছিল যে তাঁরা ৩০ শতাংশ শ্রমিকের জন্য তাঁদের পোষ্যদের থেকে নাম দেবেন। সেই অনুযায়ী ৪৮ জনের নাম দেওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তাঁরা কোনো তালিকা দেননি। এ বিষয়ে নতুন করে আর কিছুই বলার সুযোগ নেই। তবে চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের বকেয়া বেতন–ভাতা দ্রুত পরিশোধ করা হবে।