প্রতিনিধি পাবনা

গ্রাফিতি মুছে ফেলার প্রতিবাদে মানববন্ধন। সোমবার সকালে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন   

পাবনার ঈশ্বরদী সরকারি কলেজে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সমর্থন করে আঁকা দেয়ালচিত্র (গ্রাফিতি) মুছে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ১৯ এপ্রিল পাবনা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম নয়ন ও ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের প্রস্তাবিত কমিটির আহ্বায়ক খালেদ বিন পার্থিবের নেতৃত্বে ১০-১২ জন ছাত্র এই গ্রাফিতি মুছে ফেলে এবং সেখানে নিজেদের দলীয় স্লোগান লেখে।

আজ সোমবার সকালে কলেজ এলাকায় দেয়াল লিখন মুছে ফেলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনের নানা স্মৃতি ফুটে উঠে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজে। এই কাজ করেন শিক্ষার্থীরা | ফাইল ছবি

জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে এবং আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের কিছু শিক্ষার্থী তাদের বিদ্যালয়ের দেয়ালে বিভিন্ন স্লোগান লিখে প্রতিবাদ জানায়। এসব স্লোগানের মধ্যে ছিল, “বুকের ভেতর দারুণ ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর”, “দমায় রাখতে পারেনি, পারবে না”, “বিদ্যালাভে লোকসান, নাহি অর্থ নাহি মান, হীরক রাজা বুদ্ধিমান”, “রক্তের দাম চাই” সহ আরও কিছু লেখা।

এদিকে, আন্দোলনকারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। কেন্দ্রীয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে লেখা হয়, 'জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতি মুছে ফেলে লেখা হলো বিএনপির ৪ নেতা-কর্মীর নাম।'

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী আহসান হাবিব আকাশ, ইকবাল হাসান তামিম ও কে এম মহিবুর রহমান জানান, 'আমরা আমাদের আন্দোলনের ইতিহাস রক্ষা করতে চাই। এই দেয়াল লিখন ছিল আমাদের সংগ্রামের প্রতীক, যা মুছে ফেলা এক ধরনের ইতিহাসের অপমৃত্যু।'

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া বিবৃতিতে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম নয়ন বলেন, 'সম্প্রতি ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণের দেয়ালে আঁকা “জুলাই গণঅভ্যুত্থান” সম্পর্কিত গ্রাফিতি নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তা আমাদের গভীরভাবে ব্যথিত করেছে। আমাদের উদ্দেশ্য কখনোই ইতিহাস মুছে ফেলা কিংবা কোনো আন্দোলন বা চেতনার অপমান করা ছিল না। কলেজ প্রাঙ্গণে আমরা যে চিত্রগুলো সংশোধন করেছি, তার মধ্যে আমরা তিনজন সংগ্রামী মানুষকে সম্মানের জায়গা থেকে উল্লেখ করেছি, যারা ৯০-এর গণআন্দোলন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন।'

তিনি আরও বলেন, 'দুঃখজনকভাবে, এই কাজটি ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং কিছু মহল জনমত বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে, যা অনুচিত। আমরা বিশ্বাস করি, ছাত্র রাজনীতি এবং আন্দোলনের ইতিহাসকে বিকৃত না করে সম্মান জানিয়ে এগিয়ে যাওয়া উচিত।'