প্রতিনিধি শরীয়তপুর

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র। ১২ এপ্রিল তোলা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে যাওয়ায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নড়িয়া পৌরসভা এলাকায় এ আদেশ বলবৎ থাকবে।

সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে উপজেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে ১৪৪ ধারার আদেশ প্রচার করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ১৪৪ ধারার নোটিশে বলা হয়, নড়িয়া উপজেলার বিএনপির দুটি পক্ষ একই স্থানে কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা থাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষায় পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এ সময়ের মধ্যে কোনো সভা, জমায়েত, মাইক ব্যবহার বা আইনশৃঙ্খলার পরিপন্থী কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগ উঠেছে, নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদের নেতৃত্বে পদ্মা নদী থেকে বালু তুলে বিক্রি করছে একটি চক্র। ফরিদ আহমেদ নড়িয়ার চরআত্রা এলাকার স্তূপ করা ১০ কোটি ঘনফুট বালু নিলামে কিনেছেন। কিন্তু তিনি ড্রেজার লাগিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন। এতে নদীর তীর রক্ষা বাঁধ ও ফসলি জমি ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে ১৪, ১৫ ও ১৬ এপ্রিল নড়িয়ার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ, অবস্থান ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এসব কর্মসূচিতে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন আহম্মেদ, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল এস এম ফয়সাল, ঢাকার কলাবাগান থানা মহিলা দলের সভাপতি শামীমা জামানসহ নেতা–কর্মীরা অংশ নেন।

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দিন বলেন, নড়িয়ায় বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলের দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে যায়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘নড়িয়ায় বিএনপির দুটি পক্ষ একই সময়ে একই স্থানে কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে, এমন আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। নদীর তীরে স্তূপ করে রাখা ড্রেজিং মাটি বিক্রির অনুমোদন দেওয়া হলেও নির্ধারিত এলাকা ছাড়িয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করেছি। তারা নির্দেশনা না মানলে, তাদের কার্যাদেশ বাতিল করা হবে।’