প্রতিনিধি সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জ মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধে সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জ | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত ওয়ার্ড সুবিধা না দেওয়ার প্রতিবাদ এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে হাসপাতাল চালুর দাবিতে টানা অনির্দিষ্টকালের ক্লাস বর্জনের পাশাপাশি দ্বিতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের মদনপুর এলাকায় সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় সড়কের দুই পাশে যানবাহনের জ্যাম লেগে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

পরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী এসে শিক্ষার্থীদের সড়ক ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। এরপর লাঠিপেটা শুরু করে সেনাবাহিনী। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় সেনাবাহিনী। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

তবে ঘটনার পর সেনাবাহিনীর মেজর মেজবাহ উদ্দিন গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, সড়ক অবরোধ করায় শিক্ষার্থীদের সরানো হয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। 

এর আগে ১৫ এপ্রিল অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন এবং পরের দিন ১৬ সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। সড়ক অবরোধের সাড়ে তিন ঘণ্টা পর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবরোধ তুলে নিলেও ক্লাস বর্জন ও কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, প্রথম দফা অবরোধ তুলে নেওয়ার পর ওয়ার্ড ক্লাসের সুবিধা ও হাসপাতাল চালুতে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায় ফের অবরোধে নামেন তাঁরা। দাবি পূরণ হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি শিক্ষার্থীদের।

সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন

মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাক আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘ছাত্ররা আজ মানববন্ধন করেছে এ সময় সড়ক অবরোধ করে ফেলে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে তাদের সরিয়ে দেয়। তাদের সেনাবাহিনী ও পুলিশের সরিয়ে দেওয়ার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে সব ছাত্ররা একত্র হয়ে আন্দোলন করছে। এখনো পরিস্থিতি ঠান্ডা হয়নি।’

মোস্তাক আহমেদ ভূঁইয়া আরও বলেন, ‘আমাদের ডিজি মহোদয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এ ব্যাপারে তাঁরা ছাত্রদের দাবির বিষয়টি নিয়ে আশ্বস্ত হয়েছেন কিন্তু ডেডলাইনটা নিশ্চিত করা যায়নি। আমি আশাবাদী দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে।’

সুনামগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম বলেন, শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে সড়কে যাত্রীসাধারণের ভোগান্তি হওয়ায় আমরা তাৎক্ষণিকভাবে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেই। তাঁদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়, তাঁরা যেন তাঁদের দাবিগুলোর জন্য মানুষকে কষ্ট না দিয়ে নিয়ম অনুযায়ী করেন।

সেনাবাহিনীর লাঠিপেটায় কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার অভিযোগে মো. আবুল কালাম আরও বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত কোনো আহত ব্যক্তির সন্ধান পাইনি।’

সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও সেনাবাহিনী | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন