প্রতিনিধি ভোলা
ভোলার গ্যাস দিয়ে জেলার উন্নয়নসহ পাঁচ দাবিতে শনিবার বিকেলে আরও তিনটি গ্যাসভর্তি গাড়ি আটকে দেন ছাত্র-জনতা। শনিবার বিকেলে ভোলা-চরফ্যাশন সড়কে | ছবি: পদ্মা ট্রিবিউন |
ভোলায় পাওয়া গ্যাস দিয়ে জেলার উন্নয়নসহ পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে ইনট্রাকো কোম্পানির এলপিজি গ্যাসভর্তি আরও তিনটি গাড়ি (কাভার্ড ভ্যান) আটকে ভোলা-চরফ্যাশন মহাসড়কে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় ছাত্র-জনতা। শনিবার বিকেলে ভোলার বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোভের সময় গাড়ি তিনটি আটকে দেওয়া হয়। এ নিয়ে শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত চারটি গাড়ি আটকে দেওয়া হলো।
গ্যাসভর্তি গাড়িগুলো আটক করে বাসস্ট্যান্ডের পাশে হেলিপ্যাড এলাকায় রাখা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে গাড়িগুলো ছাড়ানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। রাতে এ প্রতিবেদন লেখার সময় স্থানীয় ছাত্র-জনতা মশালমিছিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা জানান, গতকাল সকালে ভোলায় গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন, ঘরে ঘরে গ্যাস–সংযোগ এবং ভোলার গ্যাস ভোলার বাইরে নেওয়া বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে বদ্বীপ ছাত্রকল্যাণ সংসদ। ওই দিনই রাত ১০টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত মোস্তফা কামাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোভ করেন ছাত্র-জনতা। এ সময় ইনট্রাকোর একটি গ্যাসবাহী কাভার্ড ভ্যান আটকানো হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৩ সালের মে মাসে ভোলার গ্যাস সিলিন্ডারে করে ঢাকার কলকারখানায় সরবরাহের জন্য সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির সঙ্গে ইনট্রাকো কোম্পানির একটি চুক্তি হয়। পুলিশ ও ইনট্রাকোর কর্মীরা জানান, গতকাল রাতে ব্যাপারীর দোকান এলাকার ডিপো থেকে গ্যাস সিলিন্ডার বোঝাই করে কাভার্ড ভ্যানে ঢাকায় যাওয়ার পথে মোস্তফা কামাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গেলে ছাত্র-জনতা গাড়িটি আটকে তাঁদের দাবির কথা জানান। তখন গ্যাসভর্তি গাড়িটি বাসস্ট্যান্ডের পাশে হেলিপ্যাড এলাকায় স্থানীয় লোকজনের জিম্মায় রাখা হয়। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। ওই ঘটনার পর আজ বিকেলে ঢাকাগামী আরও তিনটি গাড়ি আটকে সড়কে বিক্ষোভ করেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
ভোলা সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক ওয়াসিব আলম জানান, বিষয়টি ওপরের কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইনট্রাকো কোম্পানির স্থানীয় কর্মকর্তা হাফিজ উদ্দিন জানান, ছাত্র-জনতার দাবির মুখে গাড়িগুলো ঢাকায় যাওয়া থেকে বিরত রাখা হয়েছে।
ভোলা সদরের ইউএনও আরিফুজ্জামান ও সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সাহাদাৎ মো. হাচনাইন পারভেজ বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে যান। ইউএনও আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিলেও তাঁরা মানেননি। আন্দোলনকারীদের দাবি, ভোলার গ্যাস ভোলায় ব্যবহার করে কলকারখানা গড়তে হবে। ভোলায় একটি মেডিকেল কলেজ গড়তে হবে। ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণসহ ইনট্রাকোর সঙ্গে অবৈধ চুক্তি বাতিল করতে হবে। এসব দাবি না মানা পর্যন্ত ভোলা থেকে গ্যাস নিতে দেওয়া হবে না বলে তাঁরা জানিয়েছেন।