প্রতিনিধি রাজশাহী
![]() |
গ্রেপ্তার মো. রুমেল | ছবি: সংগৃহীত |
রাজশাহীতে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা খুনের ঘটনায় করা মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার বিকেলে নগরের তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার তরুণের নাম মো. রুমেল (২৫)। তিনি মামলার প্রধান আসামি মো. নান্টুর সহযোগী বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহমেদ বলেন, একজন আসামিকে বিকেলে নগরের তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি এজাহারভুক্ত আসামি নন। তবে তদন্তে পাওয়া গেছে, তিনি প্রধান আসামির সহযোগী। তাঁর বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া থানায় আগেরও একটি মামলা রয়েছে।
এর আগে গত বুধবার রাতে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় আকরাম আলী (৪৫) ও তাঁর ছেলে মো. ইমাম হাসানকে মারধর করা হয়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর আকরাম আলী মারা যান। আকরাম পেশায় বাসচালক এবং রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন। তাঁর মেয়ে রাফিয়া আলফি এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। বাবার লাশ রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার সে পরীক্ষায় বসে।
এ ঘটনায় নিহতের ছেলে হাসান ইমাম বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার মো. নান্টু (২৮), মো. বিশাল (২৮), খোকন মিয়া (২৮), তাসিন হোসেন (২৫), মো. অমি (২০), মো. নাহিদ (২৫) ও মো. শিশির (২০)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি আসামি নান্টু তাঁর স্ত্রীকে মারধর করেন। ওই নারী আকরাম আলীর স্ত্রীর আত্মীয়। মারধরের প্রতিবাদ করেছিলেন আকরামের স্ত্রী। এতে ক্ষিপ্ত হন নান্টু। তিনি আকরামের মেয়ে ও ছেলেকে ক্ষতি করার হুমকি দেন। এর পর থেকে নান্টু বখাটেদের দিয়ে আকরাম আলীর মেয়ে রাকিয়াকে উত্ত্যক্ত করাতেন। বৃহস্পতিবার নান্টু নিজেই রাফিয়াকে গালাগালি করেন। আকরাম এ বিষয়ে নান্টুর মা-বাবার কাছে নালিশ করেন। পরে রাত ১০টার দিকে নান্টু ও তাঁর সহযোগীরা নগরের তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায় আকরাম ও তাঁর ছেলে হাসান ইমামের ওপর হামলা করেন। এ সময় ইটের আঘাতে গুরুতর জখম হন আকরাম। পরে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাত ১১টার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।
বাবার লাশের সামনে দাঁড়িয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার মানববন্ধনে রাকিয়া আলফি বলে, ‘গতকাল (বুধবার) আমি প্রাইভেট পড়া শেষ করে অটোরিকশা থেকে নামি। পরে নান্টু ও তার সহযোগীরা আমাকে গালি দেয়। আমি কিছু না বলে বাসায় গিয়ে বলি। পরে বাবা প্রতিবাদ করতে যান। তবে নান্টুর বাবা–মা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে ছেলেকে লেলিয়ে দিয়েছে। এ কারণে আমার বাবাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে বাবাকে হারিয়েছি। ওরা বাবাকে মেরে ফেলেছে। আমি বাপকে হারিয়েছি। এটার দুঃখ ভোলার মতো নয়। আমি তাদের ফাঁসি চাই।’