[tenolentSC] / results=[3] / label=[ছবি] / type=[headermagazine]

সিদ্ধিরগঞ্জে ৩ খুন: স্ত্রী-সন্তানের ছবি দেখেই ভেঙে পড়ছেন ইয়াছিন

প্রকাশঃ
অ+ অ-

প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জ

গ্রেপ্তার ইয়াছিন মিয়া এবং নিহত লামিয়া ও তাঁর চার বছরের শিশুসন্তান আবদুল্লাহ রাফসান (ডানে) | ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে তিন খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার ইয়াসিন মিয়া জিজ্ঞাসাবাদের সময় নিহত স্ত্রী-সন্তানের ছবি দেখেই হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন। নেশাগ্রস্ত থাকায় অস্বাভাবিক আচরণ করছেন। একটি প্রশ্ন ১০ বার জিজ্ঞাসা করলে একবার সাড়া দিচ্ছেন। পুলিশের ধারণা, পারিবারিক কলহের জেরে গত রোববার রাতে বা সোমবার প্রথম প্রহরে স্ত্রী-সন্তানসহ তিনজনকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে হত্যা করা হয়েছে।

তিন খুনের ঘটনায় করা মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মো. হাসিনুজ্জামান আজ শনিবার এ তথ্যগুলো জানান। তিনি বলেন, ‘নেশায় বুঁদ হয়ে থাকায় ইয়াছিনকে জিজ্ঞাসাবাদে সময় লাগছে। আমরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। কী কারণে কেন এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, তা উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা চলছে।’

গতকাল শুক্রবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া পুকুরপাড় এলাকা থেকে মাটিচাপা দেওয়া বস্তাবন্দী অবস্থায় একই পরিবারের তিনজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত তিনজনের মধ্যে গৃহবধূ লামিয়া আক্তারকে গলা কেটে, তাঁর চার বছর বয়সী ছেলে আবদুল্লাহ রাফসানকে শ্বাসরোধে এবং বড় বোন স্বপ্না আক্তারকে গলা, হাত-পা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় লামিয়ার স্বামী ইয়াছিনকে আটক করে পুলিশ। পরে রাতে ইয়াছিনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন লামিয়ার মেজো বোন মুন মুন আক্তার।

পুলিশ কর্মকর্তা মো. হাসিনুজ্জামান জানান, যেখানে তিনজনের লাশ মাটিচাপা দেওয়া হয়েছিল, সেখানে ইয়াছিনকে ঘোরাফেরা করতে দেখেছেন এলাকাবাসী। নেশাগ্রস্ত হওয়ায় ইয়াছিন কর্মক্ষম ছিলেন না। স্ত্রী লামিয়ার কাছে বিভিন্ন সময় টাকা-পয়সা চাইতেন। এটা নিয়ে তাঁদের মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল। এর জেরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তিনি বলেন, সোমবার থেকে ভুক্তভোগী লামিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে তাঁর স্বজনেরা যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। বুধবার ইয়াছিন ৫০০ টাকায় লামিয়ার ফোনটি একজনের কাছে বিক্রি করেন। এ জন্য ঘটনায় তাঁর সম্পৃক্ততা আছে বলে তাঁদের মনে হচ্ছে।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটিকে ‘নিখুঁত ক্রাইম’ মন্তব্য করে পুলিশ কর্মকর্তা মো. হাসিনুজ্জামান বলেন, ‘একটি ঘরে তিনজন মানুষ থাকত। তাদের হয়তো ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। জায়গাটি খুবই ঘনবসতিপূর্ণ। তাঁদের তিনজনকে বাইরে নিয়ে হত্যা করলে সে ক্ষেত্রে অনেক চিৎকার-চেঁচামেচি হবে। এভাবে ক্রাইম করা সম্ভব নয়। এখানে কেউ তাঁর সহযোগী ছিল কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

ইয়াছিনের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে হাসিনুজ্জামান বলেন, গত দুই থেকে তিন বছর ধরে নেশায় আসক্ত জীবন চলছে তাঁর। ভুক্তভোগী লামিয়া বিভিন্ন সময় তাঁর কাছ থেকে সম্পর্ক ছাড়াছাড়ি করার চেষ্টা করছিলেন। ইয়াছিন বিষয়টি মেনে নিতে চাচ্ছিলেন না। এগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, ইয়াছিনের আসল মা দুবাইপ্রবাসী। ইয়াছিনের বাবা দুলাল মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী আছে। ইয়াছিনের এ ধরনের উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ড ও নেশাসক্ত জীবনযাপনের কারণে তাঁরা হয়তো তাঁকে গ্রেপ্তার করিয়েছিলেন।

Fetching live reactions...
Was this article helpful?

Comments

Comments

Loading comments…
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন