তাশরিক জামানকে পুলিশের গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার | ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

প্রতিনিধি নাটোর: নাটোরের মুখোশ-মশালসহ আটক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তাশরিক জামানকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে সদর থানা থেকে তাঁকে তাঁর বাবার জিম্মায় ছেড়ে দেয় পুলিশ। তবে মুখোশ-মশাল উদ্ধারের ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ২০-৩০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে নাশকতার মামলা করেছে। ওই মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।

এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় পুলিশ শহরের হাফরাস্তা এলাকায় সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের পাশের এক বাসার সামনে থেকে পুলিশ তাশরিককে আটক করে। তাশরিক নাটোর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।

সদর থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহম্মেদের নেতৃত্বে পুলিশ শহরের হাফরাস্তা এলাকায় একটি বাড়ির সামনে থেকে তাশরিককে আটক করে। পরে তাঁকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে ছয়টি মশাল, তিনটি মুখোশ ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে।

এ সময় নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম দলবল নিয়ে সেখানে হাজির হন। তিনি উপস্থিত লোকজনকে বলেন, তাশরিক বিএনপির লোক। তিনি শহরে বুধবারের (আজ) অবরোধ কর্মসূচি উপলক্ষে নাশকতা সৃষ্টির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। খবর পেয়ে সংসদ সদস্য পুলিশ ও প্রশাসনকে জানিয়ে ঘটনাস্থলে এসেছেন বলে জানান।

পরে তাশরিককে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। আটকের সময় তাশরিক নিজেও তাঁর দলীয় পরিচয় দেন। তাঁকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের একাংশের কিছু নেতা তাঁর মুক্তির ব্যাপারে তদবির করতে থাকেন। অবশেষে বুধবার দুপুরে তাঁকে তাঁর বাবা মোস্তফা জামানের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।

সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে জেলা বিএনপির সদস্য ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন বলেন, পুলিশ আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য অন্যায়ভাবে ছাত্রলীগ নেতা তাশরিককে ছেড়ে দিয়েছে। তাশরিকের মতো ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীরা নাশকতা করে বিএনপির ওপর দোষ চাপিয়ে আসছেন। বিনা অপরাধে হামলা-মামলা করে বাড়িছাড়া করছে। পুলিশ সবকিছু জেনেও তাঁদের প্রতি অবিচার করছে। অথচ অপরাধী হয়েও ছাড়া পেয়ে যাচ্ছেন ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতারা।

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহম্মেদ বলেন, সন্দেহমূলকভাবে তাশরিককে আটক করা হয়েছিল। পরে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, তিনি নাশকতার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। উদ্ধার করা মুখোশ-মশালও তাঁর দখলে ছিল না। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে নাশকতা সৃষ্টির উপকরণ হিসেবে মুখোশ-মশাল পাওয়া যাওয়ায় অজ্ঞাত ২০ থেকে ৩০ জনের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা করেছেন।

ছাত্রলীগ করে বলেই কি তিনি নাশকতা করতে পারেন না, এমন প্রশ্নের উত্তরে ওসি বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে যাচাই–বাছাই করে তাঁকে ছেড়েছি। মামলাটি তদন্ত করে দেখা হবে এগুলো কে বা কারা সেখানে রেখেছিল। তদন্তে যদি তাশরিকের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়, তখন তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হবে। অপরাধ না করলে কাউকে হয়রানি করা হয় না।’