বেড়ায় বর্তমান ও সাবেক মেয়রের সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন পুলিশের এক সদস্য | ছবি: সংগৃহীত

প্রতিনিধি পাবনা: পাবনার বেড়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র আসিফ শামস ও সাবেক মেয়র আবদুল বাতেনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে পৌরসভার বৃশালিখা মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ইতিমধ্যে থানায় মামলা করেছে।

এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেড়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র আসিফ শামস ও সাবেক মেয়র আবদুল বাতেন সম্পর্কে আপন চাচা ও ভাতিজা। পাবনা-১ আসনের সাংসদ ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হকের ছেলে আসিফ শামস এবং বড় ভাই আবদুল বাতেন। গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত বেড়া পৌর নির্বাচনে আসিফ শামসের কাছে (নৌকা প্রতীক) পরাজিত হন তৎকালীন মেয়র আবদুল বাতেন (নারকেলগাছ)। সেই থেকে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা চলে আসছে।

পুলিশ ও এলাকার বাসিন্দারা জানান, মেয়র পদে থাকতে পৌরসভার বৃশালিখা মহল্লার হুরাসাগর নদের পাড়ে স্থাপিত বেড়া নৌবন্দরের নিয়ন্ত্রণ আবদুল বাতেনের কাছে ছিল। কিন্তু আসিফ শামস মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর ঘাটটির নিয়ন্ত্রণ চলে যায় তাঁর কাছে। এরপর থেকে তাঁদের বিরোধ চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা চলছিল। গতকাল দুপুরের পরে আবদুল বাতেনের সমর্থকেরা পুনরায় ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিতে বৃশালিখা মহল্লায় লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে একত্র হলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধরা পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করেন। এ সময় পুলিশের পাঁচ সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন বেড়া মডেল থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) আনোয়ার হোসেন, কনস্টেবল রফিক, মাহমুদ, জহুরুল ও মজিবর।

পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধরা পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করেন | ছবি: সংগৃহীত
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে আসিফ শামস ও আবদুল বাতেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাঁরা ধরেননি।

বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, বৃশালিখা মহল্লায় বর্তমান ও সাবেক মেয়রের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও আধিপত্যকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন এবং তাঁদের একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ইতিমধ্যে থানায় মামলা করেছে এবং আরও একাধিক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।