নাটোরে চেয়ারম্যান প্রার্থী অপহরণ মামলার ১৬ মাস পর ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল
![]() |
দেলোয়ার হোসেন | ছবি: সংগৃহীত |
নাটোরে গত বছর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে থেকে সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণের ঘটনায় আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। এতে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবীব ওরফে রুবেলসহ (৪৩) আওয়ামী লীগের ১৮ নেতা–কর্মীর নাম রয়েছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা নাটোর সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জামাল উদ্দিন দীর্ঘ ১৬ মাস ২২ দিন পর ৮ সেপ্টেম্বর নাটোর সদর আমলি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। মামলার বাদী ভুক্তভোগীর ভাই মজিবর রহমান আজ রোববার আদালতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারেন।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের ১৫ এপ্রিল বিকেল চারটার দিকে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করতে নাটোরে আসেন দেলোয়ার হোসেন। এ সময় প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ–সমর্থিত প্রার্থী লুৎফুল হাবীব ও তাঁর সহযোগীরা তাঁকে নির্বাচন কার্যালয়ের ভেতর থেকে নিয়ে এসে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করেন। গাড়ির ভেতরে তাঁকে মারধর ও হত্যার চেষ্টা করা হয়। পুলিশ উদ্ধার অভিযান চালালে তাঁকে সিংড়ার ঢাকোপাড়া এলাকায় রাস্তার ধারে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় অপহরণকারীরা। পরে তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন তাঁর ভাই মজিবর রহমান সদর থানায় মামলা করেন। দেলোয়ার হোসেন পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
অভিযোগপত্রে প্রধান আসামি করা হয়েছে লুৎফুল হাবীবকে। তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সুপারিশ করেছেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি পলাতক। ঘটনার পর তিনি সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন, তবে দলীয় চাপে পরে তা প্রত্যাহার করে নেন। একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীকে অপহরণের এ ঘটনাটি সে সময় ব্যাপক আলোচিত হয়।
অভিযোগপত্রে আরও ১৭ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন সুমন আলী (৩১), নাজমুল বাবু (৩৩), আতাউর রহমান (৪৬), সুজন কুমার সরকার (৩১), নিরেন চন্দ্র প্রামাণিক (৫২), অন্তর পারভেজ (৩৬), জাহিদ হোসেন (৩১), মজনু প্রাং (৩৫), নাহারুল কাওছার (৩৪), মো. পিয়াস (৩৫), নাহিদ আক্তার (৩৫), আমিরুল ইসলাম (২৫), হাসান ইমাম (৩৫), সবুজ সর্দার (৩৫), নাজমুল হোসেন (৩৫), সানোয়ার হোসেন (৪০) ও শাহীনুর ইসলাম (৩৫)।
বাদী মজিবর রহমান বলেন, ‘আসামিরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগের সদস্য। অভিযোগপত্র দাখিলের বিষয়টি আজ আদালতে গিয়ে জানতে পারি। সেখানে আমার ভাইকে অপহরণ করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে।’
তদন্তকারী কর্মকর্তা নাটোর সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জামাল উদ্দিন বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার, মালামাল উদ্ধার ও সাক্ষীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তদন্তে কিছুটা সময় বেশি লেগেছে। তবে সুষ্ঠুভাবে তদন্ত শেষ হয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন