প্রতিনিধি কিশোরগঞ্জ
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নোয়াবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে ভিজিএফের চাল বিতরণে ওজনে কারসাজির অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরে এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করার সময় একজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়। তাঁর নাম মো. হাবিবুল্লাহ হাবিব। তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ করিমগঞ্জ উপজেলা শাখার সেক্রেটারি।
এ ঘটনায় করিমগঞ্জ থানায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন হাবিবুল্লাহ। এর আগে ঘটনার পরপরই তাৎক্ষণিকভাবে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচিসহ বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, শেখ মোহাম্মদ মাহবুব মোরশেদ অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে গরিব ও দুস্থ মানুষদের মধ্যে বিতরণের জন্য সরকার জনপ্রতি ১০ কেজি করে চাল দিয়েছে। এই চাল বিতরণ সঠিকভাবে বণ্টন হচ্ছে কি না, তার তদারকি করার জন্য ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা–কর্মীদের দলীয়ভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এই নির্দেশনা অনুযায়ী, করিমগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে ভিজিএফের চালের ১০ কেজির ওজন সঠিক আছে কি না, তা তদারকি করতে যান ইসলামী আন্দোলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
অভিযোগে বলা হয়, উপজেলার নোয়াবাদ ইউনিয়ন থেকে চাল নিয়ে বের হওয়ার সময় কয়েকজন মানুষের চাল মেপে দেখা যায়, ভিজিএফের ১০ কেজি চালের জায়গায় কাউকে ৭ কেজি আবার কাউকে ৮ কেজি চাল দেওয়া হচ্ছে। ওজনে কারসাজির ঘটনাটি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ করিমগঞ্জ উপজেলা শাখার সেক্রেটারি হাবিবুল্লাহ হাবিবকে মুঠোফোনে ধারণ করতে দেখে ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের নির্দেশে ৮-৯ জন ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের ওপর অতর্কিতে চড়াও হন। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ হাবিবকে চড়থাপ্পড় মারেন। এ সময় তাঁর নাকে-মুখেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোলা ও রক্তাক্ত জখম এবং পাঞ্জাবি ছিঁড়ে যায়। কেড়ে নেওয়া হয় হাবিবুল্লাহ হাবিবের মুঠোফোন। এ সময় স্থানীয় একজন সংবাদকর্মী এ ঘটনার স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে তাঁকেও মারধর করেন ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল। পরে তাঁদের স্থানীয় পল্লিচিকিৎসক দ্বারা প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি হাফেজ মাওলানা আলমগীর হোসেন তালুকদার ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের বিচার দাবি করেছেন এবং এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। আলমগীর হোসেন বলেন, করিমগঞ্জ উপজেলার নোয়াবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়ম করায় সেটি হাতেনাতে ধরে ফেলায় ইসলামী আন্দোলনের নেতা ও সাংবাদিকদের ওপর চেয়ারম্যান ও তাঁর লোকজন হামলা চালিয়েছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল জানান, তিনি ইউনিয়ন পরিষদের ভেতরে ছিলেন। মারপিটের কোনো ঘটনা তাঁর জানা নেই। এ ছাড়া ভিজিএফের চাল সঠিকভাবে ১০ কেজি করে বিতরণ করা হয়েছে বলে দাবি তাঁর।